খুলনা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস সোমবার। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটিকে স্মরণীয় করতে সেজেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।
দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রীতি সমাবেশ, বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা, বৃক্ষ রোপন, রক্তদাতা হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্তিকরণ কর্মসূচি, টেকনিক্যাল পোস্টার সেশন, টেকনিক্যাল সেমিনার, শর্ট ফিল্ম প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবসমূহ উম্মুক্তকরণ, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহফিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরাও নিজেদের উদ্দোগে আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের।
কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মনোজ কুমার মজুমদার রোববার সকালে বাংলানিউজকে বলেন, অনুষ্ঠানকে সফল করতে পুরকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদারকে সভাপতি এবং উপ-পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) ড. জি জি মো. নেওয়াজ আলীকে সদস্য সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার।
সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রীতি সমাবেশ, এরপর জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে।
উদ্বোধন শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। ১১টায় বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি, ১১টা ১০ মিনিটে ব্লাড ডোনার হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্তিকরণ, ১১টা ২০ মিনিটে টেকনিক্যাল পোস্টার সেশন, ১১টা ৩০ মিনিটে টেকনিক্যাল সেমিনার, দুপুর ১২টায় কুয়েট’র উপর নির্মিত শর্ট ফিল্ম প্রদর্শনী, ১টা ১০ মিনিটে আলোচনা সভা, দুপুর ৩টায় দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবসমূহ উম্মুক্তকরণ, বিকেল ৪টায় ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, ৫টা ১৫ মিনিটে দোয়া মাহফিল এবং সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
কুয়েট সূত্রে জানা যায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৭ সালে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ দিক নির্দেশনায় ৩ জুন ১৯৭৪ সালের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে, অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও খুলনাবাসীর ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনা।
এটি একটি স্বায়ত্বশাসিত ডিগ্রি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হলেও বিভিন্ন সমস্যা এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা থাকার কারণে এবং শিক্ষা ও গবেষণার বর্তমান চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের আরো তিনটি ইনস্টিটিউট অব টেকনোললিসহ এই প্রতিষ্ঠান ২০০৩ সালের ০১ সেপ্টেম্বর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। যাত্রা শুরু হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটি খুলনা সিটি করপোরেশন থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং খুলনা সিটি সেন্টার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিবেষ্টিত ১০১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে নির্মল বাতাসের ক্যাম্পাস এবং অনুকূল পরিবেশে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৭টি আবাসিক হল রয়েছে। অবকাঠামোগুলো যেমন আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন, ইনস্টিটিউট, ওয়ার্কশপ, খেলার মাঠ, ক্যাফেটেরিয়া, অডিটোরিয়াম, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কোয়ার্টার ইত্যাদি পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং আস্তে আস্তে এগুলোর উন্নতি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৪