ঢাকা: গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ এম মুস্তাফা জামান।
একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিয়ে অসত্য বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশেরও প্রতিবাদ জানান।
শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, কয়েকজন শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা সহকারী শিক্ষক আলী আশরাফকে অধ্যক্ষ পদে বসাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অসত্য সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলন অধ্যক্ষ মুস্তাফা জামান জানান, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। কিছু অসৎ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে ব্যবহার ও ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। বিগত ২০০৩ সালে বিদ্যালয়ের জমাকৃত ফান্ড ছিল মাত্র ১৭ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠান ফান্ড থাকায় উক্ত টাকা কুক্ষিগত করে নিজেদের জন্য ফায়দা লুটার ষড়যন্ত্র চলছে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে তার বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক ও কয়েকজন সদস্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক দাবীদার আলী আশরাফ জেলা প্রশাসকের দফতর হতে স্মারক ও তারিখ বিহীন প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করে সাধারণ শিক্ষকের স্কেলে চাকুরি করছেন। তার নিয়োগের দরখাস্তে ০২/০২/১৯৮৭ ইং তারিখের দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কথা উল্লেখ থাকলেও এই তারিখে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় গুলশান মডেল হাই স্কুলের কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ তৃতীয় বিভাগ ও এমএ তৃতীয় বিভাগ,এম এড তৃতীয় বিভাগ ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের নিয়োগপত্রের বলে তিনি অধ্যক্ষের চেয়ার দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এছাড়া শিক্ষক স্বপন কুমার ঘোষ যার বিরুদ্ধে, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও রেজাল্ট কার্ড টেম্পারিং এর অভিযোগ প্রমাণিত। শিক্ষিকা জিন্নাতুন নাহার যিনি মৌখিকভাবে নিয়োগ হয়ে সরকারী শিক্ষকের বেতন নিচ্ছেন। বরখাস্তকৃত শিক্ষক ওবায়েদ উল্লাহ‘র বিরুদ্ধে কোচিং এর ১ লাখ ৭৪ হাজারের টাকা আত্মসাতের দায়ে মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, সাবেক কমিটির কিছু সদস্যের অভিযোগ টাকার কোনো হিসাব নয়। এটা মিথ্যা। প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম ভিন্ন ভিন্ন কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন ও তাদের দেওয়া ভাউচার অনুযায়ী ব্যয় নির্বাহ করা হয়, অধ্যক্ষ নিজে কোন ব্যয় করেন না।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে গত ৫ মাসে চেক জালিয়াতি করে টাকা লুটপাটের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রতি মাসে এমপিও বিহীন শিক্ষক, গেষ্ট শিক্ষক,কর্মচারী, টেলিফোন, বিদ্যুৎ, পানি, সংবাদপত্র ও ইন্টারনেট, এসএসসি কেন্দ্র ফি, কলেজের পরীক্ষা পরিচালনা, টয়লেট্রিজ সামগ্রী ক্রয়, স্টেশনারী দ্রব্য ক্রয়, ইলেকট্রিক সরজ্ঞাম ক্রয় ও ইলেকট্রিশিয়ানের মজুরী, যাতায়াত, আপ্যায়ন, মেরামত ও সংস্কার এবং বিবিধ খরচ। জেএসসি রেজিষ্ট্রেশন ফি, স্কুল ও কলেজের ভর্তির কার্যক্রম, পরীক্ষার সম্মানী, এইচএসসি- কেন্দ্র ফি, সিলেবাস মুদ্রণ, অডিট ফি, ৯টি ফ্যান ও ইলেকট্রিক সরজ্ঞাম ক্রয়, স্বীকৃতি নবায়ন ফি, প্রিন্টারের টোনার, মেরামত ও সংস্কার ইত্যাদি বাবদ ৫ মাসে ২১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। যার প্রতিটি ভাউচার রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম ভিন্ন ভিন্ন কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন ও তাদের দেওয়া ভাউচার অনুযায়ী ব্যয় নির্বাহ করা হয়, অধ্যক্ষ নিজে কোন ব্যয় করেন না। সভাপতি ও সংসদ সদস্যের ওপেনহার্ট সার্জারির জন্য বিদেশে যাওয়ার জন্য ১০লাখ টাকা গ্রহন করলেও পরে তিনি তা ফেরত দেন।
তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমে অসত্য সংবাদ প্রকাশ করায় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সংসদ সদস্য এসএম আবুল কালাম আজাদ জুলাই ও আগষ্ট মাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি ও প্রতিষ্ঠানের বেতন সিট ও চেকে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত রয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রতিষ্ঠানের শৃংখলা ও সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে আজ নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি সরকারের নিকট নিরাপত্তা চাই, সত্য কথা বলার জন্য হয়ত প্রাণও যেতে পারে। শিক্ষার পরিবেশ তৈরি ও ষড়যন্ত্র হতে প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচানোর জন্য শিক্ষা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৪