ঢাকা: দেশের প্রায় ৫ লাখ মানুষ গরু মোটাতাজাকরণের সঙ্গে যুক্ত। এরমধ্যে মাত্র ৫-১০ ভাগ অসাধু লোক অধিক মুনাফার আশায় স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কনফারেন্স রুমে রবিবার ‘গরু মোটাতাজাকরণ ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বক্তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রাণী হাসপাতালের চিফ ভেটেরিনারি অফিসার ড. এ বি এম শহিদ উল্লাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. মোফাজ্জল হোসাইন, ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ইউরিয়া খাওয়ানোর গরুর মাংস মানুষের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়। বহু বছর ধরেই এটি প্রচলিত বিজ্ঞানসম্মত একটি পদ্ধতি। তবে খাবারে ইউরিয়ার পরিমাণ ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। পরিমাণের চেয়ে বেশি ইউরিয়া খাওয়ালে গরুর শরীরে বিষক্রিয়া ঘটে পশু মারাও যেতে পারে।
এক্ষেত্রে মাংস খেলে মানুষের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে কুরবানির ঈদের সময় ভারত থেকে আমদানি করা গরু কতটা স্বাস্থ্যসম্মত জানতে চাইলে ড. এ বি এম শহিদ উল্লাহ বলেন, বর্ডারে আমাদের চেকপোস্ট আছে। বৈধ উপায়ে যে গরুগুলো আসে তাদের আমরা পরীক্ষা করে তড়কা, বাদলা ও ক্ষুরা রোগের টীকা দিয়ে বাজারে ছাড়ি।
তিনি বলেন, অসুস্থ গরু সবসময় নির্জীব থাকে। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। খাবারও খেতে চায় না। এসব গরুর পেছনের দিকে উরুর পেশীবহুল জায়গায় আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে তা উল্লেখযোগ্যভাবে দেবে যাবে।
প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ বলেন, ভারত থেকে আসা গরুগুলো দেখতে বড় হলেও সেগুলো বয়স বেশি থাকায় মাংস সুস্বাদু হয় না।
বক্তারা বলেন, গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি লাভজনক ব্যবসা। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২ মিলিয়ন মেট্রিক টন মাংস উৎপাদন হচ্ছে, যা চাহিদার মাত্র ৩০ ভাগ পূরণ করতে পারে। প্রতিদিন যেখানে একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির ১২০ গ্রাম মাংস খাওয়া প্রয়োজন সেখানে সরবরাহ আছে মাথাপিছু প্রতিদিন মাত্র ৩৭ গ্রাম।
তবে গরু মোটাতাজাকরণে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দ্রুত মোটাতাজাকরণের জন্য ডেক্সরামিথাসন, কোর্টিসল, বিটামিথাসন, হাইড্রোকর্টিসন, প্রেডনিসলন ইত্যাদি স্টেরয়েড ড্রগস ব্যবহার করে তাকে বলেও জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪