রংপুর: একসময় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার দরিদ্র পরিবারের শিশুরা অভাব-অনটনের কারণে বিদ্যালয়ে যেত না বা গেলেও একসময় তারা ঝরে পড়তো। উপজেলার কিছু এলাকায় প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুদের মধ্যে পুষ্টির অভাবও প্রকট।
তারপরেও পরিবার কিংবা সামাজিকতা রক্ষায় বাবা-মা সন্তানদের স্কুলে পাঠালেও অধিকাংশ শিশু অভূক্ত থেকে স্কুলে গিয়ে টিফিনের অভাবে স্কুল থেকে পালিয়ে যেত।
সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, ঝড়েপড়া রোধ, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন, স্কুলের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সাধনের জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কারিগরি সহায়তায় স্থানীয় বে-সরকারি সংস্থা ইকো সোস্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এর সহযোগিতায় ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ১৭৫টি বিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার ৩৩৪ জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে প্রতিদিন এক প্যাকেট করে পুষ্টিমানসম্পন্ন বিস্কুট বিতরণ শুরু করে। যা এখনো চালু আছে।
শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুল শিক্ষকরা বলছেন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি অব্যাহত থাকায় ৫ থেকে ১১ বছর বয়সের স্কুলগামী শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের যেমন উন্নতি হয়েছে, তেমনি এ অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিও হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্কুলের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি, ঝরেপড়া রোধ ও টিফিনে স্কুল ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা কমেছে।
উপজেলার পাইকান কুটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের সামনে সুসজ্জিত বাগানে নানা জাতের শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজ আগ্রহেই এ কাজ করেছে। শ্রেণিকক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে স্কুলব্যাগে পরিচ্ছন্ন পানির বোতল ও একটি টিফিনবক্স।
পাইকান কুটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচির ফলে এ অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। পুষ্টিমান এ বিস্কুট খেয়ে ৬৭ ভাগ ক্যালরি পূরণ হচ্ছে আর অবশিষ্ট ক্যালরি পূরণের জন্য বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় সবজি বাগান করা হয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক-জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪