ঢাকা: সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত গ্রামীণ মেলার দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সেমিনারে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কয়েকটি বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শ্রেণিকক্ষে দ্বিপাক্ষিক চিত্তাকর্ষক শিক্ষাদান, ইভটিজিং বন্ধ করে ছাত্রীদের জন্য রাস্তাঘাট নিরাপদ করা, বাল্যবিবাহ রোধ, শিক্ষার্থীদের অপুষ্টি দূর করা এবং অভিভাবকদের সচেতন থাকা।
তিনি আরও বলেন, এনজিও কর্মীদের এত কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণের পরও দেশে বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি। সরকারের একার পক্ষে বাল্যবিবাহ বন্ধ সম্ভব নয়। এ ধরনের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষেত্রের অবক্ষয় ও ব্যাধী দূর করতে এনজিওগুলো আরো কাজ করতে পারে।
শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ দিনদিন কমছে উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষাখাতের বিনিয়োগকে ব্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু এখাতের বরাদ্দকে ব্যয় হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে দেখা উচিত।
বাংলাদেশে গবেষণার জন্য তেমন কোনো বরাদ্দ থাকে না। বিশেষ করে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেখা যায় না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা এখনও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। অথচ এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা উচিত। কারণ প্রতিবন্ধী শিক্ষা কোনো দাতব্য কার্যক্রম নয়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’র উপাচার্য ও পিকেএসএফ’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ড. এ. কে. এম. নূর-উন-নবীর সভাপতিত্বে সেমিনারে টিএমএসএস’র নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগম এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্র্যাকটিসেস’র (সিদিপ) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া দু’টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য ড. এ. কে. এম. নূর-উন-নবী বলেন, ঘরেই শিশুদের শিক্ষা শুরু হওয়া উচিত।
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী বদলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একসময় বিদ্যালয়ে পরীক্ষার আগে বিনা পয়সায় কোচিং করানো হত। আর এখন বিদ্যালয়ের পড়া বিদ্যালয়ে হয় না।
পিকেএসএফ অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে সামাজিক পুঁজিগঠনের কাজও করছেন বলেও জানান ড. এ. কে. এম. নূর-উন-নবী।
পিকেএসএফ’র রজতজয়ন্তী উদযাপন-এর অংশ হিসেবে গত ২৬ অক্টোবর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাত দিনব্যাপী ‘উন্নয়ন মেলা-২০১৪’ শুরু হয়।
মেলায় ১৩টি সেমিনারের পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রি চলচ্ছে। ১ নভেম্বর এ মেলা শেষ হবে।
মেলায় পিকেএসএফ’র ৮১টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ১২৫টি স্টল বিভিন্ন গ্রামীণ পণ্য প্রদর্শন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৪