জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) মেডিকেল সেন্টারের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেই দায় সেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ভবন উদ্বোধনের পর ১ মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সেবাদান কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ মেডিকেলে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা।
বর্তমানে অর্থের অভাবে অকেজো হয়ে পড়ে আছে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেডিকেল সেন্টারে নবনির্মিত এ ভবনটি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ ডা. শামসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন মেডিকেলে আসবাবপত্র এবং সেবা দানের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির সুব্যবস্থা না থাকায় পুরাতন মেডিকেল ত্যাগ করতে পারছি না। এ বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও সেখান থেকে ফলপ্রসূ কোনো উত্তর আসেনি।
পুরাতন জরাজীর্ণ মেডিকেল সেন্টারেই ৩ শিফটে ২৪ ঘণ্টা সেবা দান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেলে কর্মরত একজন চিকিৎসক বাংলানিউজকে জানান, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মেডিকেলটি অনেক দিন ধরেই চিকিৎসা সেবা দানের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। শয্যা সংকট তো রয়েছেই সেই সঙ্গে নারী এবং পুরুষের জন্য আলাদা শয্যার ব্যবস্থা ছিল না কখনোই।
এছাড়াও রয়েছে কক্ষ সংকট, যার ফলে একই কক্ষে একাধিক চিকিৎসককে রোগী দেখতে হয় যা অত্যন্ত বিব্রতকর। সেই সঙ্গে চিকিৎসা সেবা দান নীতির পরিপন্থি। নতুন মেডিকেলে সেবা দান কার্যক্রম শুরু করতে পারলে হয়তো কিছুটা হলেও এ সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ইসহাক আলী বলেন, যদি কার্যক্রম চালু করতে নাই পারে তবে ভবন উদ্বোধন করে কি লাভ?
শিগগির মেডিকেল সেন্টারের নতুন ভবনে সেবাদান কার্যক্রম চালুর দাবি জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যাম্পাসে একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিল। ২০১২ সালে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের দাবি আরো জোড়ালো হয়। পরে তারা পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টারসহ অন্যান্য দাবিতে আন্দোলনও করেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করার পর অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন উপাচার্যের দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পরিসংখ্যান বিভাগের আব্দুল মালেক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
সে সময় পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের জন্য শিক্ষার্থীর জরাজীর্ণ মেডিকেল সেন্টারটির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পরে ২০১৩ সালের ২৩ মার্চ অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টার প্রতিষ্ঠার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৪