জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অধীনে এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইএমবিএ) প্রোগ্রামে এমবিএ কোর্স সম্পন্ন করেও দীর্ঘদিন সনদপত্র পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
২০১১ সালে শুরু হওয়া এই কোর্সে বর্তমানে ১০টি ব্যাচে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।
কোর্স সম্পন্ন করার প্রায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তারা কোনো বৈধ সনদপত্র পাননি। তবে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে অফিস প্যাডে নামমাত্র ১টি নম্বরপত্রের প্রতিলিপি ও ১টি টেস্টিমোনিয়াল প্রদান করেছে প্রশাসন। কিন্তু সেই নম্বরপত্রে কোন স্মারক নং, ভলিউম নং কিংবা রেফারেন্স নম্বর না থাকায় কেউ চাকরি ও উচ্চতর শিক্ষার জন্য আবেদন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কোর্স শুরু করার আগে নীতিমালা তৈরি করা হয়নি। তাই নীতিমালা না থাকায় কোর্স শেষ করেও সনদ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। নীতিমালা তৈরির জন্য গত জুনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল খায়েরকে প্রধান করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে প্রশাসন।
এদিকে কোর্স সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে সনদ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইএমবিএর পুরাতন ও বর্তমান সব শিক্ষার্থীরা শনিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেওয়া স্মারকলিপিতে ভুক্তভুগী শিক্ষার্থীরা বলেন, নম্বরপত্র কিংবা সনদপত্রের অভাবে অনেকেই উপযুক্ত চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছেন না, কারো কারো পদোন্নতি দীর্ঘায়িত হচ্ছে, কারও চাকরি স্থায়ীকরণ হচ্ছে না, এমনকি অনেকের চাকরির জন্য নির্ধারিত বয়সসীমা পেরিয়ে যাচ্ছে।
তারা বলেন, গত ২৩ মে আমাদেরকে বলা হয়েছিল, পরবর্তী সিন্ডিকেট সভাতে এ বিষয়ে সমাধান হবে এবং সাময়িক সনদপত্র ও নম্বরপত্র দেওয়া হবে। কিন্তু তারপর প্রায় ৫ মাস অতিবাহিত হলেও কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে তা প্রদান করতে
পারেননি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ হবে, কাল হবে এমন টালবাহানা করে কর্তৃপক্ষ আমাদের ২ বছর ধরে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। অথচ আমাদের মধ্যে কারো কারো চাকরির বয়সসীমা পেরিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রচন্ড হতাশা ও বেকারত্ব আমাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। আর যারা চাকরিরত আছেন তারা শুধুমাত্র সনদের অভাবে প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী শামস বলেন, যারা ফ্রেসার তারা বিভিন্ন চাকরিতে টিকলেও সনদপত্র না থাকায় বাদ পড়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে প্রমোশন ওয়ার জন্য এমবিএ করেছেন কিন্তু সনদপত্রের জন্য তাদের প্রমোশন আটকে আছে। কেউ কেউ উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করতে এমবিএ করেছেন তারাও বিপাকে পড়েছে।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আমির হোসেন বলেন, নীতিমালা তৈরির কাজ শেষ। আগামী ৯ তারিখ একটা মিটিং আছে। সে মিটিং শেষে নভেম্বরের শেষ দিকে সনদপত্র প্রদান করতে পারব বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৪