রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এ কে এম শফিউল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে শোক পদযাত্রা, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট, শিক্ষক সমিতি এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোটের উদ্যোগে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে, শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে রাবি শিক্ষক সমিতির ডাকে রোববার বিশ^বিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে ভর্তি কার্যক্রম চলছে।
বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শোক র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এইদেশের সহিংসতা সৃষ্টিকারী কিছু জঙ্গি সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে নৃংশসতার পরিচয় দিয়েছে। জাতির বিবেক শিক্ষকদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশের প্রগতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করতে চায়।
বক্তারা সরকার, পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান মজুমদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার পাড়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ছাদেকুল আরেফিন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ওয়ারদাতুল আকমাম, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রশাসক প্রফেসর সফিকুন্নবী সামাদী, প্রফেসর আবুল কাশেম, প্রফেসর জাহিদুল হাসান, প্রফেসর শামসুল আলম সরকার, প্রফেসর আফসার উজ জামান খান প্রমুখ।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার পাড়ে জানান, পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভা শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
অন্যদিকে, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে রাবি প্রগতিশীল ছাত্রজোট। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বর থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি খাদিমুল বাশার, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সহসভাপতি মিঠুন রায়, ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন সুজন, ছাত্র ফেডারেশনের অর্থ সম্পাদক তমাশ্রী দাস, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শোক পদযাত্রা বের করে বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট। শোক পদযাত্রাটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, নাট্যজন মলয় কুমার ভৌমিক, প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, প্রফেসর এসএম আবু বকর, প্রফেসর নীলুফার সুলাতানা, প্রফেসর শাহ আযম শান্তুনু, সহকারী প্রফেসর কাজী মামুন হায়দার প্রমুখ।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জোটের সভাপতি শাহাবুদ্দিন সিহাব। সমাবেশ থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন প্রফেসর শফিউল ইসলাম। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৪