ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর বিক্ষোভে উত্তপ্ত বেরোবি

সাজ্জাদ বাপ্পী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৪
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর বিক্ষোভে উত্তপ্ত বেরোবি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রংপুর: ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল চালুর দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন, ল্যাব স্থাপনের দাবিতে পরীক্ষা ও ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে ইলেট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা।



এছাড়াও বকেয়া বেতন ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক কমকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি পদমর্যাদাসহ অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিবাদ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সব মিলিয়ে উত্তাল উত্তরবঙ্গের এই বিশ্ববিদ্যালয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল চালুর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, চলতি মাসের ১০ তারিখে হল চালুর জন্য ছাত্রদের ভাইভা নেওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে ভাইভা নেওয়া হয়নি।

এজন্য তারা গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) উপাচার্যের কাছে  ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে আবাসিক হল চালু, স্নাতক ডিগ্রি শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চালু, সেসন জট নিরসনে প্রত্যেক বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষকসহ গবেষণাগারে আধুনিক উপকরণ, লাইব্রেরি ও বই সরবরাহ করা, পরিবহন সংকট নিরসন করা।
 
অপরদিকে ল্যাব স্থাপনের দাবিতে পরীক্ষা ও ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে ইলেট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা।

তারা জানান, ১৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য রয়েছে মাত্র ৪ জন শিক্ষক। বিভাগটি চালু হবার পর থেকে ১ম ব্যাচের ১৮ মাস, ৩য় সেমিষ্টারের ২য় ব্যাচের ১২ মাস এবং ২য় সেমিষ্টারে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের এখন পর্যন্ত কোনো ক্লাশ হয়নি।

বিক্ষোভ শেষে তারা ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে প্রদান করেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, ইলেকট্রনিক্স ল্যাব, টেলিকমিউনিকেশন ল্যাব, কম্পিইটার ল্যাবে পর্যাপ্ত কম্পিউটার, সিনিয়র শিক্ষক নিয়োগ ও অপটিক ল্যাব স্থাপন।

অন্যদিকে বকেয়া বেতন ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন কমকর্তা ও কর্মচারীরা।

তারা বলেন, দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে তারা কোনো বেতন পাচ্ছেন না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের বেতন পরিশোধ না করলে ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে পদমর্যাদাসহ অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিবাদ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শিক্ষক সমিতির আয়োজনে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের অর্ধ শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

শিক্ষকরা বলেন, অবিলম্বে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

তারা বলেন, ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তিনি নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে শিক্ষকদের আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় সমস্যার সমাধান না করে উপাচার্য আবার ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে তাকে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা দেন শিক্ষকরা।

উল্লেখ, শিক্ষক সমিতি এসব দাবিতে গত ২৭ অক্টোবর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই শিক্ষকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, অর্থ কমিটি এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘন্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।