শেকৃবি: বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সিট বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের কয়েক গ্রুপের তমুল সংঘর্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ( শেকৃবি) ।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সহকারী হল প্রভোস্ট শরমিন চৌধুরী তার নিজ এলাকার ১৩ জন শিক্ষার্থীকে গণরুম থেকে চার সিট বিশিষ্ট কক্ষে দেওয়ার জন্য মনোনিত করলে অন্য শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের অপমান করে বের করে দেন।
এ ঘটনা নিয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট প্রফেসর অসীম কুমার ভদ্রের সাথে বুধবার সন্ধ্যায় সহকারী হল প্রভোস্ট শরমিন চৌধুরীর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। এ সময় মেয়ে শিক্ষার্থীরা সহকারী হল প্রভোস্ট শরমিন চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেন।
এসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দাশ ছাত্রদের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি উত্তরাঞ্চল সমিতির পদবঞ্চিত নেতা রবিউল ইসলাম মন্ডল ও ছাত্রলীগ বহিষ্কৃত আলামিন মন্ডলের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্চিত হন।
সেসময় দেবাশীষের কর্মীরা তাদের উপর চড়াও হন। এক সময় উভয় পক্ষের কর্মীরা রড ,লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এসময় উপাচার্য বাসভবনের সামনে থাকা শিক্ষকরা তাদের থামাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর খাইরুল কবিরসহ ৫ জন আহত হন।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সহকারী হল প্রভোস্ট শরমিন চৌধুরী কান্না বিজরিত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, প্রভোস্ট প্রফেসর অসীম কুমার ভদ্র আমাকে রুমের মধ্যে তালা মেরে চলে যাওয়ায় আমার স্বামী প্রফেসর নজরুল ইসলাম তার কাছে চাবি চান। কিন্তু অসীম কুমার ভদ্র চাবি না দিয়ে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করেন।
প্রভোস্ট প্রফেসর অসীম কুমার ভদ্র বাংলানিউজকে বলেন, নজরুল হলের দায়িত্বে না থাকা সত্তেও হলে এসে আমার গায়ে হাত তুলেছে। তাই সচেতন শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রশাসনের কারও সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে উপাচার্য ভবনে শিক্ষকদের কয়েকজন এই বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রবেশ করেছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ক্যাম্পাস পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে বাংলানিউজকে জানান শেরেবাংলা নগর থানার এসআই অনন্ত কবির।
এদিকে এ ঘটনার জের ধরে রাত দেড়টার দিকে নবার সিরাজ-উদ-দৌলা, কবি নজরুল ও শেরেবাংলা হলে গিয়ে উভয় পক্ষ উভয় পক্ষের কক্ষে ভাঙচুর চালায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে উভয় পক্ষেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৪