রাবি: ‘বিচার প্রার্থীরা যদি আদালতে বসেও বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বুঝতে না পারে তবে বিচারের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। উচ্চ আদালতে তাই বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে হবে।
শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ‘বাংলাদেশের ভাষানীতি ও ভাষাপরিকল্পনা: প্রসঙ্গ আদালতের ভাষা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (আইবিএস) ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশের ভাষানীতি ও ভাষা পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারের সভাপতির বক্তব্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হক বলেন, হঠাৎ করেই উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার এখনই সম্ভব নয়। উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এর চর্চা শুরু হয়েছে। আস্তে আস্তে এ চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা। এই সংবিধান সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ আইন বিধায় কোনো অজুহাতেই এ সংবিধান অমান্য করার কোনো অবকাশ নেই।
তিনি বলেন, সাংবিধানিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যবহারে দেশে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন- ১৯৮৭’ হয়েছে। তবে দেশের নিম্ন আদালতগুলোতে মূলত বাংলা ভাষার প্রাধান্যই বেশি। উচ্চ আদালতে বাংলা ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ২০১২ সালে হাইকোর্ট বিধিমালা, ১৯৮৫ সংশোধনের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের কার্যক্রমে বাংলা ভাষা ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের সর্বভারতীয় বাংলা ভাষা মঞ্চের সম্পাদক নীতীশ বিশ্বাস বলেন, পৃথিবীতে ভাষাকেন্দ্রিক রাষ্ট্র একটি। সেটি হল বাংলাদেশ। সেই দেশের আদালতে সেই ভাষা ব্যবহার না হয়, তবে তা খুবই দুঃখজনক।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য দেন- বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৪