ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

এ সাফল্য শুধু মায়ের জন্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪
এ সাফল্য শুধু মায়ের জন্য ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সারারাত আমার চোখে ঘুম নেই। যেমনটি চেয়েছি তেমন ফল পাবো তো! উত্তেজনা কাটাতে মেয়েকে বার বার জিজ্ঞেস করছি।

আমাকে আস্বস্ত করে মেয়ে বলছে ‘মা দেখো ভালোই হবে’। সকালে ইন্টারনেটে রেজাল্ট দেখে স্বস্তি ফিরে পেলাম।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ভিকারুন নিসা নুন স্কুলের সামনে জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিতে আসা এক পরীক্ষার্থীর মা অন্য মায়ের কাছে এসব গল্প করছিলেন।

জিপিএ-৫ রেজাল্ট দেখে মা-ই বেশি খুশি। খুশি হবারই কথা। সন্তানের এই কৃতিত্বের পেছনে ভূমিকা তো মায়েরই বেশি।

দুপুরে স্কুল কর্তৃক ফলাফল প্রকাশের পর শত শত ছাত্রীর উল্লাস ছিলো লক্ষ করার মতো। তবে আনন্দ প্রকাশে মায়েরাও বাদ যাননি।

বেইলী রোড থেকে আসা জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মা ইয়াসমিন (৪০)। ফলাফল পাওয়ার পর উচ্ছ্বসিত কন্ঠে তিনি জানান, এই মুহুর্তে আমি পৃথিবীর সব থেকে সুখী মা। আমি যেমন চেয়েছি তাই দিয়েছে আমার মেয়ে।
 
সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের জেএসসির ছাত্রী সানজিদা হক (১৪) বাংলানিউজের মাধ্যমে মাকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আমার এ সাফল্যের পেছনে রয়েছেন মা আর স্কুলের শিক্ষকরা। তারা না থাকলে আমি জিপি-৫ পেতাম না।

গেটের কোনায় মেয়ের সঙ্গে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছেন আরেক ছাত্রীর মা। কাছে গিয়ে জানা গেলো তারা খিলগাঁও থেকে এসেছেন। মন খারাপের কারণ জানতে চাওয়ায় কিছুক্ষণ চুপ থেকে মা তানিয়া রহমান (৩৮) জানালেন, মেয়ে এবার পিএসসিতে অল্পের জন্য জিপিএ-৫ মিস করেছে।

অবশ্য এজন্য দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করলেন তিনি। বললেন, রেজাল্ট তো খারাপ হবেই। পরীক্ষার মধ্যে এতোবার  হরতাল দিলে ছেলে-মেয়েদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। কিভাবে তারা ভালো পরীক্ষা দেবে?
 
বেইলী রোডের পিএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত আতিমা খান (৯) জানালো, এই খবর সবার আগে আম্মুকেই জানিয়েছি। আম্মু আমাকে অনেক হেল্প করেছেন। আম্মুও ভীষণ খুশি হয়েছেন।  

মতিঝিলের সীমা আক্তার (৪০) বললেন, আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা। ওকে  (মেয়েকে) আমি প্রাইভেট টিচারও দেইনি। আমার আর ওর চেষ্টায় আজ জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

এবছর ফলাফল সম্পর্কে স্কুলের অধ্যক্ষ সুফিয়া আক্তার বলেন, হরতালসহ দেশের নানা অস্থিরতার কারণে একটু পিছিয়ে গেলেও গুনগত মানের দিক থেকে আমার শিক্ষার্থীরা এগিয়ে রয়েছে। স্কুলের অভিভাবকসহ শিক্ষক শিক্ষিকা সবাই এবছরের ফলাফলে সন্তুষ্ট।

নেপোলিয়ান বলেছিলেন, ‘আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি একটি শিক্ষিত জাতি দেব’। সন্তানের সাফল্যের পেছনে মায়ের এই নিঃস্বার্থ ভূমিকা নেপোলিয়ানের সেই উক্তিটিকে বার বার প্রমাণ করিয়ে দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।