ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শুক্রবারের সরেজমিন

মৌলিক শিক্ষাদান রফিকুল ইসলাম কলেজের লক্ষ্য

জনি সাহা ও ইসমাইল হোসেন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
মৌলিক শিক্ষাদান রফিকুল ইসলাম কলেজের লক্ষ্য ছবি : জনি সাহা/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শুক্রবারের সরেজমিন, বাংলানিউজের নিয়মিত উদ্যোগ। প্রতি শুক্রবার বাংলানিউজের একটি টিম চলে যাচ্ছে কোনো বিশেষ ঘটনাস্থল বা সাইটে।

সেখানে ঘুরে কথা বলে, বিষয়ের গভীরে ঢুকে তুলে আনছে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের রিপোর্ট ও ফিচার। থাকছে ছবি-ভিডিও। যা প্রকাশিত হচ্ছে পরবর্তী রোববারে। ‘শুক্রবারের সরেজমিন’র এবারের স্পট ছিলো ভৈরব বন্দর। বাংলানিউজ টিম গত শুক্রবার এই বন্দরকে ঘিরে কর্ম-চাঞ্চল্য দেখেছে। আশে পাশে শত রকমের পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে। যার মধ্য থেকে উঠে এসেছে ভৈরবের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার গল্প। এবারের টিমে ছিলেন স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ইসমাইল হোসেন, ডেপুটি চিফ অব ফটো করেসপন্ডেন্টস কাশেম হারুন, নিউজরুম এডিটর জনি সাহা ও কবির হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহাঙ্গীর।

ভৈরব থেকে: মূল ফটক পেরিয়ে পিচঢালা পথের দু’পাশে পর পর তিনটি অ্যাকুরিয়াম। রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধ গাছের শীতল ছায়ায় অ্যাকুরিয়ামের রঙিন মাছগুলো সাঁতার কাটছে আপন মনে। বিশাল মাঠ আর ফুলের বাগানের সংমিশ্রণে এক অপরূপ সাজে সেজেছে ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা (অনার্স) কলেজ ক্যাম্পাস।

হাওর-বাওর এলাকার ছাত্রীদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতে ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ কলেজ। ১৯৯৫ সালে সব বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এখানে প্রায় সাড়ে চার হাজার ছাত্রী। ভৈরবে ছাত্রীদের জন্য একমাত্র আবাসিক সুবিধা নিয়ে কলেজটিতে এইচএসসি ও ডিগ্রি ছাড়াও রয়েছে অনার্স পড়াশোনার ব্যবস্থা।

কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ শহরের বাইরে থাকায় কথা হয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক শহীদুল ইসলামের সঙ্গে। কলেজটির আগের ও বর্তমান অবস্থা চিত্র তিনি তুলে ধরেন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জেলার শীর্ষ পর্যায়ে কলেজটির অবস্থান উল্লেখ করে শহীদুল ইসলাম বলেন, স্নাতক শ্রেণিতে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে পাসের হার ৯৩ শতাংশ। ২০১৪ সালে কলেজটির সাতজন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

২০০২ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয় বলেও জানান তিনি।

ইংরেজি, সমাজকর্ম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান এ পাঁচ বিষয়ে এখানে স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়।

পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক সত্যজিত দাস ধ্রুব দাবি করেন, আবাসিক কলেজ হওয়ার কারণে আশেপাশের কয়েকটি জেলার শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করে। এর মধ্যে নরিসিংদী, গাজীপুর নেত্রকোনা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেটের হাওর অঞ্চল রয়েছে।

দুই একর জমির ওপর অবস্থিত কলেজটিতে একাডেমিক ভবন তিনটি। এর মধ্যে দু’টি ইট-পাথরের পাঁচতলা ভবন। একটি একতলা টিনশেড। মূলত এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ক্লাস হয় এ টিনশেড ভবনে।

কলেজটির আলাদা বিশেষত্ব পাঁচতলা আবাসিক ভবন। ছাত্রীদের চাপ বেশি হওয়ায় পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে আরো পাঁচটি একতলা টিনশেড ভবন। একজন শিক্ষার্থীর মাসিক হোস্টেল খরচ দুই হাজার দুইশ’ টাকা। আর স্টাফ রয়েছেন ৪৩ জন। এসব আবাসিক ভবনে বিভিন্ন শ্রেণির ৬২৫ জন থাকেন।

পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ধ্রুব আরো জানান, কলেজে মোট দুই হাজার ৪১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে এইচএসসিতে এক হাজার ৬১৩ জন, ডিগ্রিতে ১৬২ জন। বাকিরা অনার্সের শিক্ষার্থী। ৬টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে পাঠদান করা হয় ছাত্রীদের। শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষায় শিক্ষিত করাই লক্ষ্য। এর কারণে পিছিয়ে নেই এখানকার ছাত্রীরা।

কলেজের আরো একটি বিশেষত্ব ছাত্রীদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে। ফিঙ্গার প্রিন্ট ছাড়াও ক্যামেরার মাধ্যমে তা করা হয়। এছাড়াও সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কলেজ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

পুরোপুরি নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত এ কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে।

শিক্ষকদের শ্রম আর ছাত্রীদের মেধা দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত এ কলেজ থেকে সর্বশেষ মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন ৭ জন শিক্ষার্থী।

** ভৈরবকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে
** জ্যান্ত মাছ পেতে চান, ভৈরবে চলে যান
** কয়লার অভাবে ব্যবসা অঙ্গার!
** সব থেকেও কিছু না থাকার দুঃখ ভৈরবের
** ভালো নেই ভৈরবের পাদুকা শ্রমিকরা

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।