ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সম্ভাবনা, যথাযথ ব্যবহার চাই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৫
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সম্ভাবনা, যথাযথ ব্যবহার চাই ছবি: সায়মন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাতকে যথাযথ ব্যবহার করে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব।


 
রোববার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে এখন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে উন্নয়নের জন্য এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যবহার করা যায়। আশা করি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভবিষ্যত প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
 
তিনি আরও বলেন, যারা আজ শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি করছে তাদের মনে রাখতে হবে আজ থেকে তাদের কর্মজীবন শুরু হচ্ছে। তবে তারা ইচ্ছা করলে আরও উচ্চ শিক্ষা নিতে পারে। আমি আশা করবো শিক্ষা জীবনে অর্জিত জ্ঞান ও মেধা দিয়ে এসব শিক্ষার্থী তাদের সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে কর্মজীবনকে আলোকিত করে তুলবে এবং জাতি গঠনে অবদান রাখবে।
 
বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য আইন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমি আশা করবো সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সে আইন মেনে চলবে। আমাদের শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আজকের শিক্ষার্থীরা আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ক্যাম্পাস বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি তাদের ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনেছে। কিন্তু সেখানে এখনও ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে পারেনি। আমি আশা করবো শিগগির কর্তৃপক্ষ এ ক্যাম্পাস নির্মাণ করবে। যারা আইন অনুযায়ী চলতে পারবে না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করবো না।
 
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ড. আকবর আলি খান বলেন, বর্তমান বিশ্বে জ্ঞানের অসাধারণ অগ্রগতি ঘটছে। বিদ্যুতের বিপ্লব মানুষের গবেষণার ক্ষমতাকে প্রতিদিন বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায়ও বড় পরিবর্তন ঘটেছে। আজ যারা শিক্ষাসমাপণীমূলক সনদ পাচ্ছেন তাদের শিক্ষার সমাপ্তি ঘটছে না। বরং প্রতিনিয়ত তাদের নতুন জ্ঞান আহরণের মানসিক প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।
 
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব বাড়ছে। একদিকে মানবসম্পদ উন্নয়ন অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। শিক্ষার উন্নয়নের সকল ব্যয় ব্যক্তির পক্ষে বহন করা সম্ভব না। কাজেই রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।

অন্যদিকে শিক্ষা যাতে সামাজিক অসাম্যের বাহন না হয় সে জন্য দেশে শিক্ষার মান দ্রুত বাড়াতে হবে। শিক্ষা মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত: এ ক্ষেত্রে আমাদের অনেক তৎপর হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, আধুনিক অর্থনীতির চাহিদা অনুসারে শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠন অবশ্য প্রয়োজনীয় কিন্তু যথেষ্ট নয়। অর্থনীতি মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে পারে। কিন্তু জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। তাই শুধু প্রতিযোগিতাক্ষম ও উৎপাদনশীল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুললেই হবে না, আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান বের করতে হবে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আবদুল রবের সভাপতিত্বে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ, সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও ছাত্রছাত্রীগণ।
 
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোট দুই হাজার ১৯ জন শিক্ষার্থীকে সনদ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ ফলাফলে জন্য ২ জনকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক, ৩ জনকে চেয়ারম্যান স্বর্ণপদক এবং ৪ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

এছাড়া চেয়ারম্যান স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রয়াত ছাত্র আলামিনের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ৩ লাখ টাকার অনুদান দেওয়া হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।