ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

তদন্তে অগ্রগতি নেই প্রশ্ন ফাঁস মামলার

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৫
তদন্তে অগ্রগতি নেই প্রশ্ন ফাঁস মামলার

ঢাকা: উচ্চ মাধ্যমমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় করা দুইটি মামলার তদন্ত কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। নতুন করে নেই গ্রেফতারও।



সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশ্ন ফাঁস ঘটনায় এখন কলেজের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। এরপর তদন্ত করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় রাজধানীর কাফরুল এবং গাজীপুরের টঙ্গী থানায় পৃথক দুইটি মামলা করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
 
ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ বাংলানিউজকে বলেন, মামলার পাশাপাশি কলেজে অভ্যন্তরীণ তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ তদন্তের অগ্রগতি জানা যায়নি।
 
পাবলিক পরীক্ষার নিয়মানুযায়ী, পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে সিলগালা প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু কেন্দ্রে পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্রের সিলগালা প্যাকেট থানা থেকে নিয়ে খোলার অভিযোগ পাওয়া যায়।

পরে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা স্মার্টফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয়। রাজধানীর নামি-দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ উঠেছে।
 
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, নামি-দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ মে টঙ্গী শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় সেখানে তারা রসায়ন বিষয়ের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা (এমসিকিউ) শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই প্রশ্নফাঁস হওয়ার প্রমাণ পান।   
 
কর্মকর্তারা বলছেন, কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে বিদ্যালয় শাখার সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মশিউল ইসলাম ও অফিস সহকারী আবুল হোসেনকে সৃজনশীল প্রশ্ন বাছাই করতে দেখেন তারা। এ সময় এমসিকিউ প্রশ্নের প্যাকেটও খোলা দেখা যায়।

‘প্যাকেটগুলো যাচাই করে প্রতি সেট থেকে প্রশ্ন কম পাওয়া যায়। এর আগে ওইদিন সকালে প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল আনসার থানা থেকে সিলগালা করা প্রশ্নের প্যাকেট কেন্দ্রে নিয়ে আসেন,’ বলেন তারা।
 
এ ঘটনায় ২১ মে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাদী হয়ে টঙ্গী থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিরা হলেন- ওই প্রতিষ্ঠানের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল আনসার, স্কুল শাখার সিনিয়র শিক্ষক মশিউল ইসলাম ও অফিস সহকারী আবুল হোসেন।
 
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টঙ্গী থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত চলছে। মামলায় দু’জন আসামি জামিনে আছেন, কেউ গ্রেফতার নেই।
 
এদিকে ঘটনার পর প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িতদের কলেজ থেকে বরখাস্ত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
 
সূত্র জানায়, রাজধানীর বিএএফ শাহীন কলেজ কেন্দ্রেও গত ২৪মে নির্ধারিত সময়ের আগেই রসায়ন দ্বিতীয় পত্রের বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কলেজের রসায়নের প্রভাষক কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। পরে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়।
 
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, কলেজের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। এরপর আমরা তদন্ত করবো।

‘আর গ্রেফতার শিক্ষক জেল হাজতে রয়েছেন,’ যোগ করেন  তিনি।
 
এক প্রশ্নের উত্তরে এসআই কামরুজ্জামান বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইনে আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িত ব্যক্তির ৭ থেকে ৮ বছর জেল হতে পারে।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা,  জুলাই ২, ২০১৫
এমআইএইচ/এমএ

** প্রশ্ন ফাঁসকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।