ঢাকা: প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কৌশলে পরীক্ষা নিয়ে প্রায় শতভাগ জিপিএ-৫ পেয়ে আলোচনায় আসা রাজধানীর একটি কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রশাসন।
ডেমরার গোলাম মোস্তফা মডেল কলেজ চলতি বছর তিন ঘণ্টা আগে পরীক্ষা নিয়েছে বলেও প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গত বছরও নির্ধারিত সময়ের আগে পরীক্ষা নিয়ে ৬০ জনের মধ্যে ৫৯ জন, অর্থাৎ ৯৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বছর পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁস করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এ ধরনের কাজ করবে তাদের রেহাই দেওয়া হবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে অনুসন্ধানে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তথ্য পেয়েছে, পরীক্ষার দিন ভল্ট থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে সকাল সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের হলরুমে একত্র করে প্রশ্নের সমাধান করা হয়েছে।
ফেসবুকের মাধ্যমে চলতি বছরের এইচএসসির গণিত প্রশ্ন ফাঁস করার অভিযোগে গত ১৬ জুলাই ওই কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও পরিচালনা বোর্ডের সহকারী পরিচালক আবদুল মজিদসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছিল ডিবির সাইবার অপরাধ তদন্ত দল।
আবদুল মজিদ প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে ফোনের মাধ্যমে চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী রায়হানকে সরবরাহ করেন। রায়হান তাৎক্ষণিকভাবে তা ফেসবুকের ইনবক্সে দিয়ে প্রশ্ন নিতে আগ্রহীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নেন। রায়হানের লোকজন টাকা দেওয়া ব্যক্তিদের প্রশ্ন দেন। ওই টাকা পরে চক্রের সদস্যরা ভাগাভাগি করে নেয়।
গত বছরও নির্ধারিত সময়ের আগে প্রশ্ন ফাঁস করে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার এক সভায় জানানো হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
চলতি বছরে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন এবং পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে মামলা হয়েছে।
২০১৫ সালের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার জাতীয় মনিটরিং কমিটির পর্যালোচনা সভায় গোলাম মোস্তফা মডেল কলেজের প্রশ্ন ফাঁস করে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি উঠে আসে।
বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, প্রশ্ন ফাঁস করে কেউ রেহাই পাবে না। তথ্য প্রযুক্তি আইন ও পাবলিক পরীক্ষা আইনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএম