ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সরকারি তিতুমীর কলেজ

ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রাবাসে অবস্থানের দায়ভার শিক্ষার্থীদের

ফররুখ বাবু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৫
ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রাবাসে অবস্থানের দায়ভার শিক্ষার্থীদের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সরকারি তিতুমীর কলেজের আক্কাছুর রহমান আঁখি হল ‘সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে জানিয়েছেন প্রিন্সিপাল প্রফেসর আবু হায়দার আহমেদ নাসের।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আঁখি হলের ৪৬টি কক্ষের মধ্যে ২১টি কক্ষকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ডি এম হানজানা।



সরেজমিনে দেখা গেছে, ২১২ নম্বর কক্ষ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ অন্য সব কক্ষে এখনও ছাত্ররা অবস্থান করছেন।

ছাত্রদের অবস্থানের বিষয় জানালে প্রিন্সিপাল বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরেও যেসব ছাত্ররা কক্ষে অবস্থান করবে তাদের নিরাপত্তার দায়ভার নিজেদের নিতে হবে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

০২ অক্টোবর (শুক্রবার) দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত সরকারি তিতুমীর কলেজের আক্কাছুর রহমান আঁখি হলের ২১২ নম্বর কক্ষের ছাদ ধসে পড়ে।

এরপর ০৩ অক্টোবর সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম ওয়াহিদুজ জামান ও প্রধান প্রকৌশলী ডি এম হানজানা ২১টি কক্ষকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দিয়ে নোটিশ দেন।

আক্কাছুর রহমান আঁখি হলের ঝুঁকিপূর্ণ ২১টি কক্ষ হলো– ১০৪, ১০৫, ১০৬, ১০৮, ১০৯, ২০২, ২০৫, ২০৬, ২০৮, ২০৯, ২১১, ২১২, ২১৩, ২১৭, ৩০১, ৩০২, ৩০৩, ৩০৫, ৩০৭, ৩০৯ ও ৩১৯ নম্বর কক্ষ।

তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাত্রাবাসের ২১টি কক্ষের দেয়ালে একাধিক ফাটল ও প্লাস্টার উঠে গেছে। এছাড়া বাকি অন্য কক্ষের দেয়ালে ছোট ছোট ফাটল রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রিন্সিপালকে জানানো হলে তিনি বলেন, ছাত্রদের থাকার জন্য ‘আক্কাছুর রহমান আঁখি’ একমাত্র হল। এজন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ২১টি কক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের অন্যত্র সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রকৌশলী ডি এম হানজানা।

এদিকে ছাত্রদের অভিযোগ, বিকল্প থাকার ব্যবস্থা না করে শুধু বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে, সরকারি তিতুমীর কলেজের আক্কাছুর রহমান আঁখি ছাত্রাবাসে অবস্থানরত ছাত্রদের জানানো যাচ্ছে যে, ২১২ নম্বর কক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার (ছাদ ধসে যাওয়া) পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর ও প্রধান প্রকৌশলী সরেজমিনে পরিদর্শন করে ২১টি ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে অবস্থানরত ছাত্রদের অন্যত্র অবস্থান করার জন্য বলা হলো।

ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষের ছাত্রদের ভাষ্য, কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধু নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা কোথায় থাকবেন বা কি করবেন এ বিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।

২১৩ নম্বর কক্ষের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, ছাত্র নেতারা বহুবার হলের রিপিয়ারিং করেছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এত টাকা ব্যয় করার পরেও হঠাৎ করে ছাত্রদের অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য শুধু নোটিশ দিয়ে দেবে, তা আমরা মানিনা।
সাইফুলের অভিযোগ, ছাত্রদের থাকার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ। এমন কি ২১টি কক্ষের ছাত্ররা হলের অন্য রুমে থাকবে না-কি চলে যাবে তাও বলেনি কর্তৃপক্ষ।

ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের বিকল্প ব্যবস্থার বিষয়ে এ প্রতিবেদককে প্রিন্সিপাল বলেন, এমনিতেই ধারণক্ষমতার বেশি ছাত্র হলে থাকে। এখন সবাইকে আরও একটু কষ্ট করে গাদাগাদি করে কম ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে থাকতে হবে। এছাড়া ছাত্রদের অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করার মতো কলেজের ফান্ড নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরেও ২১৭ নম্বর কক্ষে বাংলা বিভাগের ছাত্র সৌরভ বড়াল অবস্থান করছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ জানা শর্তেও কেন অবস্থান করছেন? প্রশ্ন করলে সৌরভ বড়াল বলেন, ঢাকায় সবার আত্মীয় নেই। তারপর সবার আর্থিক অবস্থা ভালো না। এরপর  মাসের শুরুতে কোথায় মেস ভাড়া পাবো।

১৯৮৩ সালে নির্মিত আক্কাছুর রহমান আঁখি হলে মোট ৪৬টি কক্ষ রয়েছে। এ হলে নির্ধারিত ২৫৬ জন ছাত্র থাকার কথা। তবে বর্তমানে ৪৫০ থেকে ৫০০ ছাত্র থাকেন বলে জানান সহকারী হল সুপার সালাউদ্দিন হায়দার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৫
এফবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।