ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রশ্ন ফাঁসের বিচার মোবাইল কোর্টে

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
প্রশ্ন ফাঁসের বিচার মোবাইল কোর্টে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ

ঢাকা: পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাজা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
 
প্রশ্নপত্র ফাঁস করলে জড়িতদের সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে ‘শিক্ষা আইন-২০১৫’ এর খসড়া প্রণয়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।


 
বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসবিরোধী আইনে সাজার মেয়াদ কম রাখায় চলছে সমালোচনা। এসবের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি জানালেন।  
 
মোবাইল কোর্টে তাৎক্ষণিক বিচারে করা হয় বলে সাজার মেয়াদ আপাতত কম রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান নাহিদ।
 
সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নিজ দফতরে বাংলানিউজকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস অপরাধ। এ অপরাধে মোবাইল কোর্ট সাধারণত দুই বছরের বেশি শাস্তি দিতে পারেন না। মোবাইল কোর্ট সবচেয়ে বেশি কার্যকর। অপরাধীকে ধরে ঘটনাস্থলে শাস্তি দিলে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অনেক সময় সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।
 
তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী, প্রশ্রয়দাতা, সহায়তাকারী ও কেনা-বেচায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিলেও আইনের আওতায় আনা হবে। যে প্রশ্ন কিনেছে সেও শাস্তি পাবে, তবে না বুঝে কিনলে সেটা কোর্ট বুঝবেন।
 
আইনের খসড়ায় অভিভাবক, ছাত্র-শিক্ষক, শিক্ষাবিদ সবার মতামত নেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, খসড়া ঠিক আছে কি-না বা কিছু সংযোজন-বিয়োজন প্রয়োজন আছে কি-না- এসব বিষয়ে যে কেউ মতামত দিতে পারবেন।
 
আইন না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় জানিয়ে নাহিদ বলেন, শৃঙ্খলা ও কাজ এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োজন হয়।
 
পরীক্ষা ও প্রশ্নপত্র প্রণয়ন পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন করে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ মুহূর্তে সুপার টেকনোলজি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
 
বিজি প্রেস কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেখানে কারও একার পক্ষে প্রশ্ন দেখার সুযোগ নেই। কোচিং সেন্টারগুলোকেও মনিটর করা হচ্ছে।
 
শিক্ষা আইনের খসড়ায় ৬৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
 
১৯৮০ সালের ‘দ্য পাবলিক এক্সামিনেশনস (অফেন্স) অ্যাক্ট’-এ প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ১০ বছরের শাস্তির বিধান রাখা হয়। ১৯৯২ সালে তা সংশোধন করে সাজা চার বছর করা হয়।
 
সাজার মেয়াদ নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে নাহিদ বলেন, যদি সবাই মনে করে সাজার পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন, তবে বাড়াবো, প্রয়োজনে ২০ বছর করবো। আমরা চাচ্ছি, কার্যকরী পদক্ষেপ।
 
‘শিক্ষা আইন-২০১৫’ নামে খসড়াটি এখন মতামত গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
 
আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত খসড়ার বিষয়ে ই-মেইলে (info@moedu.gov.bd এবং law_officer@moedu.gov.bd) মতামত দেওয়া যাবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
এমআইএইচ/আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।