খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) বুধবারের দিনটি অন্যদিনের চেয়ে আলাদা। দিনটি শুরু হয় আনন্দ আর উচ্ছ্বাস নিয়ে।
ক্যাম্পাস জীবনের প্রাণের সতীর্থদের স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তোলার চলছে উৎসব। ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে থেকে ভেসে আসছে ডিজিটাল ক্যামেরা আর মোবাইলের ক্লিক-ক্লিক শব্দ।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যায়টির সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে।
বেলা ১১টার পর থেকে কালো গাউন আর মাথায় ক্যাপ পরে পঞ্চম সমাবর্তনে যোগ দিতে গ্রাজুয়েটরা ক্যাম্পাসে ঢুকতে শুরু করেন। তারপর থেকে শুরু ক্যাম্পাস জীবনের পুরনো স্মৃতি অনুসন্ধান। চলছে দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসের পরিচিত রূপ নতুন করে রোমন্থনের চেষ্টা।
সেই সঙ্গে অপেক্ষা এই বুঝি এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যে ক্ষণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা নেবেন সনদপত্র।
ক্যাম্পাসের সবখানেই যেন ব্লাক গ্রাউন পরা বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা। ফটোশেসনসহ নানা আড্ডায় মেতে উঠেছেন তারা। শিক্ষাজীবনের পুরনো আনন্দ ঝালিয়ে নিতে বন্ধু ও সহপাঠীরা যোগ দিয়েছেন দল বেধে। অনেকেই ক্যাম্পাস জীবনের ফেলে আসা সেই সোনা ঝরা দিনগুলোতে ফিরে যাচ্ছেন। সমাবর্তনে অংশ নেওয়া সদ্য গ্রাজুয়েটদের চোখে-মুখে শুধু উচ্ছ্বাস আর আনন্দেরই ছাপ।
সনদপত্র নিতে আসা গ্রাজুয়েট ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আজ থেকে আমরা গ্র্যাজুয়েট। গ্র্যাজুয়েট হ্যাট পরে বুঝলাম অনুভূতি ও আবেগটা ভিন্ন রকম। নিজেকে নিয়ে গর্ব অনুভব করছি, ভালো লাগার কথাটা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। এ দিন আর ফিরে পাবো না জানি। তাই স্মৃতির আখরে দিনটি ধরে রাখতে ছবি তুলে রাখছি।
এদিকে, পঞ্চম সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেলা আড়াইটার পর হেলিকপ্টার যোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে রাষ্ট্রপতি অবতরণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে বরণ করে নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পরে তিনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সমাবর্তন উপলক্ষে পর্যায়ক্রমে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। মূল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বও করবেন রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ২৫ বছর পূর্তিতে বছরব্যাপী উৎসব কার্যক্রমের উদ্বোধনী ঘোষণা করবেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান প্রমুখ।
সূত্র জানায়, ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত যে সব শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়েছে, তারা এই পঞ্চম সমাবর্তনে সনদপত্র পাবেন। এর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। এদের মধ্যে আড়াই হাজার গ্রাজুয়েট উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সনদপত্র নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন।
অনুষ্ঠানে ১৫ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আইটি (পিজিডিআইটি) ও এক জনকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হবে। পিএইচডি ডিগ্রি পাচ্ছেন মো. হাসানুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এবার ১৪ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হচ্ছে গোল্ড মেডেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৫/ আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা
এমআরএম/ওএইচ/টিআই