ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

একাদশে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ, অনলাইন-এসএমএসে আবেদন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৬
একাদশে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ, অনলাইন-এসএমএসে আবেদন

ঢাকা: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সরকারি-বেসরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
 
বৃহস্পতিবার (১২ মে) প্রকাশিত নীতিমালা অনুযায়ী, আগামী ২৬ মে থেকে অনলাইন এবং টেলিটক মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।


 
বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে কলেজে ভর্তি করা হবে। আর দ্বিতীয়বারের মতো অনলাইনে ভর্তি করা হবে।
 
শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন স্বাক্ষরিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, এবার ১০টি কলেজে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন, প্রার্থীর একইসঙ্গে ১০টি কলেজের মেধাক্রম প্রকাশ করা হবে।
 
ভর্তি প্রক্রিয়ায় গতবছর ৫টি প্রতিষ্ঠানে পছন্দের সুযোগ ছিল।
 
অনলাইনে (www.xiclassadmission.gov.bd) আবেদন করলে দশ প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৫০ টাকা ফি ধরা হলেও এসএমএসে প্রতি কলেজের জন্য ১২০ টাকা ফি দিতে হবে। অনলাইনে মাত্র একবারই আবেদন করা যাবে।
 
আগামী ৯ জুন পর্যন্ত আবেদন করে প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৬ জুন। বিলম্ব ফি ছাড়া ১৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। আর ক্লাস শুরু হবে আগামী ১০ জুলাই।
 
বিলম্ব ফি দিয়ে আগামী ১০-২০ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে।
 
নীতিমালা অনুযায়ী, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের এসএসসি উত্তীর্ণরাও ছাড়াও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের পরীক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
 
ভর্তি নীতিমালায় বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
 
মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকূল্যে ১ হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি হবে না।
 
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৫ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত বা এমপিও বর্হিভূত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিও বর্হিভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য ভর্তির সময় ভর্তি ফি, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে ৯ হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না।
 
কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফি’র বেশি নেওয়া যাবে না এবং অনুমোদিত সব ফি গ্রহণের ক্ষেত্রে যথাযথ রশিদ প্রদান করতে হবে।
 
দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো উল্লিখিত ফি যতদূর সম্ভব মওকুফের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে।  
 
নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো স্কুল অ্যান্ড কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে স্ব-স্ব বিভাগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করেই অবশিষ্ট শূন্য আসনে ভর্তি করাতে পারবে। তবে সব ভর্তিই অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে।  
 
বিভাগীয় এবং জেলা সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৮৯ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অবশিষ্ট আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/সন্তানের সন্তান, ৩ শতাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ও জেলা সদরের বাইরের এলাকার শিক্ষার্থী, ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
 
আর নতুন করে এবার শূন্য ০.৫ শতাংশ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) এবং অপর ০.৫ শতাংশ প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
 
নীতিমালায় বলা হয়, বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণরা যেকোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণরা মানবিকের পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় এবং ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।
 
সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত/জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় আনা হবে। প্রার্থী বাছাইয়ে জটিলতা হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ ও রসায়নে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় নিতে হবে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে সমান জিপিএ নিষ্পত্তির জন্য পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলায় অর্জিত জিপিএ বিবেচনা করা হবে।
 
নীতিমালা অনুযায়ী, এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট গ্রেড পয়েন্ট একই হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলায় অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় আনতে হবে। স্কুল ও কলেজ সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিজ প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
 
কোনো কলেজে ভর্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারবে।
 
কলেজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীর ছাড়পত্র ইস্যু করা যাবে না এবং ভর্তি করানো যাবে না। তবে সরকারি/ আদা সরকারি/স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের বদলিজনিত কারণে তাদের সন্তানদের ছাড়পত্র ইস্যু বা ভর্তি করতে পূর্বানুমতি নিতে হবে না।     
 
কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে ৭-১৮ আগস্টের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফি এবং ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বোর্ডে জমা দিতে হবে ২২ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে।
 
ভর্তির ক্ষেত্রে নীতিমালার ব্যতয় ঘটলে বেসরকারি কলেজের ক্ষেত্রে পাঠদানের অনুমতি বা স্বীকৃতি বাতিলসহ কলেজের এমপিও বাতিল এবং সরকারি কলেজের ক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বুধবার (১১ মে) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, যাতে ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ২০১ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৪ লাখ ৫২ হাজার ৬০৫ জন। পাসের হার ৮৮.২৯ শতাংশ। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ শিক্ষার্থী।
 
এর আগে গত ৯ মে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়।
 
গতবছর প্রথম অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হলে বেশ জটিলতার মুখে পড়ে ভর্তি প্রক্রিয়া। এবার জটিলতা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন নাহিদ।

**এইচএসসিতে ঝামেলাহীন ভর্তিতে এবার আগেভাগেই প্রস্তুতি
**অনলাইনেই এইচএসসি ভর্তি, বাড়ছে কলেজ পছন্দের সুবিধা
**একাদশে ভর্তি শুরু ২৬ মে, পছন্দের কলেজ ১০টি
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৬/আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জিসিপি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।