ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বাংলানিউজকে দুই মন্ত্রী

অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতের চ্যালেঞ্জও কঠিন নয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতের চ্যালেঞ্জও কঠিন নয়

ঢাকা: প্রাথমিক শিক্ষাস্তর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যুগান্তকারী এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।


 
অতিরিক্ত শিক্ষার্থী-শিক্ষকের বোঝা, প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস এবং অবকাঠামো নির্মাণের মতো চ্যালেঞ্জও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মোকাবেলা করতে হবে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা এবং অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা রাখা না রাখারও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রয়েছে শিক্ষকদের বেতন-কাঠামো পুনর্বিন্যাসের বিষয়টিও।
 
এসব বিষয় নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষাস্তর অষ্টম শ্রেণিতে আসায় একটু চাপ বাড়লো। তবে সবার সহযোগিতা পেলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধা থাকবে না’।
 
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি দক্ষতাসম্পন্ন জাতি গঠন করতে পারবো’।  
 
‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’-এ প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত এবং ২০১৮ সালের মধ্যে তা সম্পন্ন করার কথা বলা আছে।
 
বুধবার (১৮ মে) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত এবং তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
 
সভার কার্যপত্র অনুযায়ী, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার নতুন কার্যক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং শিক্ষক নির্দেশিকা প্রণয়ন করা এখন চ্যালেঞ্জ।
 
এছাড়াও প্রাথমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষকের জন্য শিক্ষাক্রম বিস্তারসহ শিখন-শেখানো কার্যক্রমের ওপর ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
 
আর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয় পুনর্বিন্যাস করা।
 
বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপ্রাপ্ত ২ হাজার ৩৮১টি বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ৫ লাখ ১৭ হাজার ৫৫০ জন, আর শিক্ষক সংখ্যা ১৯ হাজার ২৪০ জন। মোট বিদ্যালয়ের মধ্যে এমপিওভুক্ত ৫৫৩টি এবং নন-এমপিওভুক্ত বিদ্যালয় ১ হাজার ৮২৮টি।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, প্রায় ছয়শ’ প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পর্যায়ক্রমে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে,  সর্বশেষ জেএসসি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো সেই বিদ্যালয়গুলো অংশ নেয়।
 
এরই মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতি, একাডেমিক স্বীকৃতি এবং শ্রেণি শাখা খোলা সংক্রান্ত মোট ৩১৭টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এসেছে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে।
 
প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এখন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি, একাডেমিক স্বীকৃতি, বিষয় খোলা, বিভাগ খোলা, শ্রেণি শাখা খোলা, এমপিওভুক্তি, নতুন শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং শিক্ষক নির্দেশিকাসহ যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সম্পাদিত হবে।
 
পঞ্চম শ্রেণি শেষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আর অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা হয়ে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাবোর্ডগুলোর মাধ্যমে। দুই পরীক্ষায় প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থীর বোঝা এখন পড়বে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর ওপর।
 
দু’টি সমাপনী পরীক্ষা থাকবে কি-না- জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ‘নতুন বোর্ড হবে, না অধিদফতরের অধীনে পরীক্ষাগুলো হবে- এ বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করছে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো’।
 
প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে প্রাথমিক শিক্ষা চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে তা পঞ্চম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে, এখন অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হলো। এখন কার্যত প্রাথমিক শিক্ষা ৯ বছর। কারণ, প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা বা নার্সারি বা প্লে গ্রুপেও ১ বছর পড়ে খুদে শিক্ষার্থীরা’।
 
শিক্ষকদের বেতনক্রম কী হবে- জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যেগুলো হাইস্কুলের সঙ্গে আছে, সেগুলোর শিক্ষকরা সেভাবেই বেতন পাবেন’।
 
শিক্ষকদের পাঠদানের বিষয়টি কেমন হবে- প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আপাতত ভাগাভাগি করে দেবো। ধীরে ধীরে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে’।
 
‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো নিচের ক্লাসগুলো খুলবে এবং পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো প্রতি বছর একটি করে ক্লাস খুললে অবকাঠামোর কোনো সমস্যা হবে না। তারা একটি করে কক্ষ তৈরি করতে পারবে’।
 
দক্ষতাসম্পন্ন জাতি গঠনে মৌলিক শিক্ষার এই পর্যায়ের জন্য কারিকুলাম প্রণয়নে বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর
**
প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।