ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষাবিদ ড. ছদরুদ্দিন আর নেই, অর্থমন্ত্রীর শোক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
শিক্ষাবিদ ড. ছদরুদ্দিন আর নেই, অর্থমন্ত্রীর শোক

সিলেট: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রথম উপাচার্য ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য শিক্ষাবিদ ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)।

শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

 মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগছিলেন তিনি। সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পারিবারিক সূত্র জানা গেছে, ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা রোববার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং দ্বিতীয় জানাজা সকাল ১১টায় হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।

ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী একাধারে শিক্ষাবিদ, পদার্থ বিজ্ঞানী, ভাষাসৈনিক, গবেষক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, দক্ষ প্রশাসক ও পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠক ছিলেন। ১৯৩১ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফুলবাড়ি গ্রামের সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন তিনি।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এক শোক বার্তায় ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ছদরুদ্দিন একাধারে স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সহপাঠী ও বন্ধু ছিলেন।

পঞ্চম শ্রেণি থেকে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং পরবর্তীতে এমসি কলেজ ও সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা একত্রে ছিলাম। তিনি স্কুল জীবন থেকে অত্যন্ত মেধাবি ছিলেন। স্কুলে আমাদের ক্লাস ক্যাপ্টেনও ছিলেন তিনি। সেক্ষেত্রে খুবই দক্ষ নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ’

কর্মজীবনের স্মৃতিচারণ করেন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কর্মজীবনে এসে আমরা স্ব স্ব কর্মে ব্যস্ত থাকায় দেখা-সাক্ষাৎ কম হতো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে তিনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আসেন তখনই আমাদের যোগাযোগ আরও বেড়ে যায়। ’

ড. ছদরুদ্দিনের অবদানের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শাবিপ্রবির প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। ওই সময় আমি তার প্রশাসনিক নেতৃত্বের দক্ষতা দেখেছি। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ছদরুদ্দিন চৌধুরীর অবদান ছিলো অনন্য। বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কাজে তিনি ছিলেন একজন অতন্ত্র প্রহরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা তিনিই নিযুক্ত করেন। এ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে অনুনয়-বিনয় করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভাল মানের শিক্ষক শাবিপ্রবতে নিয়ে আসতেন তিনি। ’

তিনি বলেন, ‘ড. ছদরুদ্দিন চৌধুরী দায়িত্বে থাকাকালীন শাবিপ্রবির ইতিহাসে ছিলো উজ্জল। তিনি অবসরে যাওয়ার পরও শিক্ষার উন্নয়নে সব সময়ই ছিলেন তৎপর। অবসরকালীন সময়ে তিনি সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব নেন। এসময়ই তার আমন্ত্রণে আমি এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ছিলাম আমি। ’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ছদরুদ্দিন চৌধুরী সারাজীবনই শিক্ষাবিস্তারে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তার মৃত্যুতে সিলেটসহ সমগ্র জাতি একজন খাটি দেশপ্রেমিক ও বিশেষ করে শিক্ষাজগতের একজন উজ্জল নক্ষত্রকে হারিয়েছে আমরা। ’

অর্থমন্ত্রী ড. ছদরুদ্দিন চৌধুরীর কর্মময় জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহান আল্লাহ পাকের কাছে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
এনইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।