ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবিতে বাড়ছে আসন সংখ্যা, প্রতিযোগিতাও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
ঢাবিতে বাড়ছে আসন সংখ্যা, প্রতিযোগিতাও

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বিগত বছরের তুলনায় চলতি শিক্ষাবর্ষে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাশের হার বেড়েছে। বেড়েছে জিপিএ-৫ ধারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও।

আর এতে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীর প্রধান চাহিদা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়ছে ভর্তি প্রতিযোগিতা।

 

এদিকে, শিক্ষার্থীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবং বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে চালু করা হচ্ছে নতুন নতুন বিভাগ। ফলে বাড়ছে আসন সংখ্যাও।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে আট লাখ ৯৯ হাজার ১৫০জন শিক্ষার্থী। গত বছর সংখ্যাটা ছিল ৭ লক্ষ ৩৮ হাজার ৮৭২ জন। এইবার  জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৮ হাজার ২৭৬ জন; ২০১৫ সালে সংখ্যাটা ছিল ৪২ হাজার ৮৯৪ জন । গত বছর পাসের গড় হার ৬৯ দশমিক ৬০ ভাগ ছিল; এবার তা বেড়ে ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার বেড়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৫ হাজার ৩৮২ জন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসসূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ক ইউনিটে ১ হাজার ৬১০টি আসনের বিপরীতে আবেদন যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ৬৪৩ জন যা এই বছর বেড়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রতি আসনের জন্য লড়েছিল ৫৯ জন শিক্ষার্থী যা এই বার ৮১ জন।

খ ইউনিটে ২ হাজার ২৫০টি আসনের বিপরীতে আবেদন যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৬৭৩ জন যা এই বারে ২ লাখ ১৩ হাজার ৭৫৮ জন। গত বছর আসনপ্রতি লড়েছিল ৬৭ জন যা এই শিক্ষাবর্ষে ৯৭ জন।

গ ইউনিটে ১ হাজার ১৭০টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৬ হাজার ৬২৯ জন যা এই শিক্ষাবর্ষে ১ লাখ ৬৯ হাজার ০৭০ জনে। প্রতিটি আসনের বিপরীতে  পূর্বে যেটি ছিল ৮৩ জন সেটি এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫ জনে।

ঘ ইউনিটে ১ হাজার ৪৪০টি আসনের বিপরীতে আবেদন যোগ্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৮ জন যা ৩ লাখ ৭১ হাজার ২৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আসন প্রতি শিক্ষার্থী বেড়েছে ১৭৮ জন থেকে ২৫৮ জনে।

চ- ইউনিটে ১৩৫টি আসনের বিপরীতে আবেদনযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯৩ জন; এবার তা বেড়ে হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৩৪৯ জনে। আসন প্রতি লড়েছিল ৩ হাজার ৩২১ জন শিক্ষার্থী; এবারে ৪ হাজার ৫৯৬ জন।
 
বেড়েছে ২০০ আসন :
২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে নতুন বিভাগে ও পুরতান কিছু ইনিস্টিটিউটে প্রায় দুই শ’ আসন বাড়াচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। নতুন বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ, আবহাওয়া বিজ্ঞান, হেলথ সায়েন্স, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধীনে চাইনিজ ও জার্মান ভাষা শিক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি অফিসসূত্রে জানা যায়, ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে মোট আসন ছিল ৬ হাজার ৬৮৫টি। বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে আসন ছিল ১ হাজার ৬৬০টি, কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে আসন ছিল ২ হাজার ২৮০টি, বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে আসন ছিল ১ হাজার ১৭০টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে আসন ছিল ১ হাজার ৪৪০টি এবং চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটে আসন ছিল ১৩৫টি। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে মোট আসন রয়েছে ৬ হাজার ৮০১টি। গতবারের তুলনায় আসন বেড়েছে ১১৬টি।

তবে অনুষদ সমূহের ডিনের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যমতে, আসন সংখ্যা বাড়বে প্রায় দুইশ’।   পরিসংখ্যানে ‘ক’ ইউনিটে আসন সংখ্যা ১ হাজার ৬৮০টি দেখানো হলেও এই অনুষদে আরো ৪০টি আসন বাড়ানো হয়েছে ডিন সূত্রে জানা গেছে। বাড়তি ৪০টি আসনের মধ্যে ৩০টি লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে এবং বাকি ১০টি মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগে বাড়ানো হয়েছে।   এই অনুষদে আরো ২০টি আসন বাড়তে পারে।

‘গ’ ইউনিটে আসন বেড়েছে ৮০টি। এই অনুষদে এ বছর চালু হওয়া অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটিজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগে আসন রয়েছে ৫০টি। এ ছাড়া ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগে বাকি আসনগুলো বাড়ানো হয়েছে।

‘খ’ ইউনিটে আসন বাড়ানো হয়েছে ১৬টি। বর্তমানে এই অনুষদে আসন সংখ্যা ২ হাজার ২৯৬টি। ‘ঘ’ ইউনিটে গতবার আসন সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৪০টি। এবার তা বেড়ে প্রায় ১৫শ’  হবে বলে ডিনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘আসন সংখ্যা বাড়ানো এটি ভাল দিক। তবে আরো বাড়াতে হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করেছে। অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরও করা উচিত। ’’

তিনি মনে করছেন, ভালো ভালো কলেজগুলোকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা যেতে পারে। তবে তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে যাতে জগন্নাথের মতো না হয়।     

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) ড. আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘আমাদের নতুন কিছু বিভাগ চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরাতন কিছু ইনস্টিটিউট ও বিভাগ যেখানে আসন তুলনামূলক কম ছিল সেখানেও কিছু আসন বাড়ানো হয়েছে, যা দুইশ’ হবে। এর ফলে আমরা তুলনামূলকভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দিতে পারব। ’’

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
এসকে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।