ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

‘নীলক্ষেত থেকে বই কিনে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন হয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
‘নীলক্ষেত থেকে বই কিনে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন হয়’

ঢাকা: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় কম পাস করায় শিক্ষার মান কমে যাওয়া নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে তা মোটেই সঠিক নয় দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, নীলক্ষেত থেকে বেনামি বই কিনে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের গুণগত মান বাড়ছে না যারা বলেন, তারা মোটেই সঠিক কথা বলেন না।


 
আসন্ন জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে বুধবার (২৬ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
 
মন্ত্রী বলেন, মান বাড়ছে, তবে যা বাড়া উচিত, যা করা উচিত, সেটার জন্য এখন আমরা সংগ্রাম করছি, চেষ্টা করছি, লড়াই করছি, এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। আমাদের সেই মানের শিক্ষক দরকার, কোয়ালিটি এডুকেশনের গ্যারান্টি হচ্ছে কোয়ালিটি টিচার। তার জন্য আমরা যা সম্ভব তাই করছি।
 
নাহিদ বলেন, যখন বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হতে যায়, ফর এক্সাম্পল- ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে একটা সিটের বিপরীতে ৪০ জন আবেদন করেছেন। ওখানে পাস-ফেলের ব্যাপার নয়। এক ঘণ্টায় তারা বাছাই করছেন কী করে ৩৯ জনকে বাদ দেওয়া যায়। ৩৯ জনকে বাদ দেওয়ার জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
 
তিনি বলেন, আগের বছর ইংরেজিতে মাত্র ৩ জন যখন পাস করেছিলেন, বলেছিলাম ওই তিনজনকেই ভর্তি করান। শেষ পর্যন্ত তারা আসন পূর্ণ করেছেন। দেখা যাচ্ছে পরবর্তী পরীক্ষায় সবাই এসএসসি, এইচএসসিতে যে হারে জিপিএ-৫ পায় তার চেয়ে বেশি ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে যাচ্ছেন। ওইসব ছেলে-মেয়েরাই, এটা পাস-ফেলের প্রশ্ন নয়, বাছাইয়ের প্রশ্ন।
 
‘একজন শিক্ষক বলেছেন, তারা নীলক্ষেতে গিয়ে ফুটপাতে অনেক ধরনের বই বিক্রি হয় গান, জারি, নাচ, ছড়া, কবিতাসহ নানা ধরনের বই। ওইসব জায়গা থেকে, তারা নিজেরাও দেখেন নি এসব বই কয়েকটা কিনে নিয়ে আসেন, প্রশ্নের মধ্যে ওই বইয়ের লেখক কে, একটা প্রশ্ন দিলো। তারাও জানেন না কেউ। কেন দেন, তার তো উদ্দেশ্য পাস ফেল না, তার উদ্দেশ্য হলো ৩৯ জনকে বাদ দেওয়া এবং একজনকে রাখা। সেই হিসেবে এটা কোনো পাস ফেলের প্রশ্ন না, এটা নিয়ে বিভ্রান্তি হচ্ছে। ’
 
তাহলে এই শিক্ষার্থী যারা ফেল করলো, মাত্র দশ জনে পাস করলো, তিন জনে পাস করলো, বাকিদের ভর্তি করার পরে তারা কী করে এক বছর পরে ফার্স্ট ক্লাস মার্কস পাচ্ছে তাদের কাছেই, এটা কী করে সম্ভব- প্রশ্ন তোলেন নাহিদ।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই জিনিসটা আমাদের ছেলে-মেয়েদের হতাশ করে, এই জিনিসটা ভুল ম্যাসেজ যায় সবার কাছে। আন্তর্জাতিকভাবে আমরা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। আমাদের পরীক্ষার উপর অন্যদের আস্থা কমে যাবে।
 
ভর্তি পরীক্ষা পাস ফেলের পরীক্ষা নয় উল্লেখ করে শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, যারা এতো বছর ধরে যে লেখাপড়া করে বিশাল পরীক্ষা মোকাবেলা করে আসলো এক ঘণ্টায় তাকে বিচার করতে পারেন না। এ বিষয়টা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা দরকার যে আমরা কী পড়াচ্ছি, আর তারা কী প্রশ্ন করছেন। হয়তো আগামীতে এটা সমন্বয় করলে বিষয়টা উদঘাটিত হবে। কিন্তু আমরা চাই আমাদের এই প্রজন্ম জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, আদর্শে, দেশপ্রেমে গড়ে উঠুক।    
 
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান; স্বরাষ্ট্র, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি প্রতিনিধিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
 
**প্রশ্নফাঁসকারীদের তালিকা প্রস্তুত

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।