ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ব্যবসায়ীদেরও শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়া উচিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৬
ব্যবসায়ীদেরও শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছবি:জি এম মুজিবুর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরকেও শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়া কর্তব্য বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, জনগণের অর্থে ব্যাংক মুনাফা করে, আবার তার একটি অংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করছে।

ঢাকা: সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরকেও শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়া কর্তব্য বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

তিনি বলেন, জনগণের অর্থে ব্যাংক মুনাফা করে, আবার তার একটি অংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করছে।

এভাবে ব্যবসায়ীদেরও এ দায়িত্ব নেওয়া কর্তব্য। কারণ সব শিক্ষার দায়িত্ব সরকার বহন করে না।

শনিবার (১২ নভেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসি,বি) প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচির আওতায় শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি খাতের সহযোগিতা ছাড়া সরকারের একার পক্ষে শতভাগ শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বিশ্বের কোনো দেশেই বেসরকারি খাতের সমর্থন ছাড়া এটা সম্ভব হয়নি। আমাদের মতো দেশেও বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়া কোনো সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়। ’

‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬ শতাংশ ও বাজেটের ২০ শতাংশ ব্যয় করে। কিন্তু আমাদের জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় হলেও বাজেটের ১০ শতাংশ করতে পারিনি’।

তিনি বলেন, কেবল লেখাপড়ার মান বাড়ালেই হবে না। শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ করে গড়ে তুলতে হবে। কেননা ভালো মানুষ না হলে জ্ঞানকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায় না। প্রচলিত ও গতানুগতিক শিক্ষা নিয়ে আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়। নিজেদের আত্মবিশ্বাস থেকে নৈতিক কর্ম প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হতে হবে’।

নাহিদ বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার মান বিশ্বমানে উন্নীত করার। এখন আর জ্ঞান আমদানি বা প্রযুক্তি আমদানি নয়। এখন আমাদের জ্ঞান রফতানি করতে হবে, প্রযুক্তি রফতানি করতে হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হচ্ছে ভালো শিক্ষকের অভাব। আমরা চেষ্টা করছি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভালো শিক্ষক বৃদ্ধি করতে’।

সভাপতির বক্তব্যে প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন, সিএসআর করতে ব্যাংকগুলোকে অনেক টাকা কর দিতে হয়। এজন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই করতে চান না। তাই সিএসআরকে করের আওতামুক্ত করা হলে এ ধরনের উদ্যোগ আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ কামাল খান চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাদের খান ও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. ইকবাল আনোয়ার।

প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের বৃত্তি প্রাপ্তদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন- ৩৫তম বিসিএস প্রশ‍াসন ক্যাডার ছাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ বৃত্তি পেয়ে শুধু আমার লেখাপড়া হয়েছে এমন নয়, আমার দুই বোনের পড়ালেখা বাধাগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। আমার পরিবার রক্ষা পেয়েছে’।

এ বছর বৃত্তি প্রাপ্তদের মধ্য থেকে শহিদ জিয়া মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত আইরিন আক্তার রিনা বলেন, ‘টাকার অভাবে যখন আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো ঠিক তখন এ বৃত্তি আশার আলো দেখিয়েছে। আমার মেডিকেল কলেজে পড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়ক হয়েছে। ’

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির আওতায় প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ৩ হাজার ৪৪ জন উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীকে প্রতিমাসে ২ হাজার ৪শ’ টাকার করে বৃত্তি দিচ্ছে ফাউন্ডেশন। বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে সব শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্টে অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে প্রথম তিন মাসের বৃত্তির টাকা জমা করা হয়। পুরো শিক্ষাজীবন ধরেই এ বৃত্তি দেওয়া হবে।

গত দশ বছরে এ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২ হাজার ৭৭৯ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাবৃত্তির পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, চক্ষু হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ নানা ধরনের সেবাম‍ূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৬
এসই/জিপি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।