ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

আম গাছের গোড়ার ছাগলকে মগডালে তুলে ফেসবুকে অপপ্রচার!

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
আম গাছের গোড়ার ছাগলকে মগডালে তুলে ফেসবুকে অপপ্রচার!

ঢাকা: বাঁকা আম গাছের গোড়ার ছাগলকে কারসাজির মাধ্যমে গাছের মগডালে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর সেই ছবি দিয়ে অনলাইনে ফেসবুকের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর প্রমাণ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নতুন বছরের নতুন পাঠ্যপুস্তকে ভুলভ্রান্তি নিয়ে এই অপপ্রচার চালানোকে আরও বড় ভুল হিসেবে দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
 
প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ে হার্ট, ওড়না ও আম গাছে ছাগল- বিতর্কের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী ছাগলের মগডালে ওঠার ছবিকে এল্টো বড় অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করেন।

পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে সমালোচনার মধ্যে চীন থেকে ফিরে শিক্ষামন্ত্রী সোমবার (০৯ জানুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দুই কর্মকর্তাকে ওএসডি করেন।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী প্রথম শ্রেণির ‘আমার বই’য়ে সাত পাতায় ছাগলের গাছের গোড়ার ছবিটি, মগডালে তুলে দিয়ে অপপ্রচার চালানোর ছবি দেখান।
সংবাদসম্মেলনে মন্ত্রী, ছবি: সংগৃহীত

সাদা এক পৃষ্ঠায় একটি রঙিন ছবি দেখিয়ে তিনি জানান, একটা ছবি এঁকে সমস্ত জায়গায় প্রচার করা হচ্ছে। ফেসবুক-ইউটিউবে যাচ্ছে। জনগণের ধারণায় নিয়ে আসা হয়েছে যে ছাগল গাছের মধ্যে উঠে আম খাচ্ছে।
 
“এই ধরনের কোনো পৃষ্ঠা কোনো বইয়ের মধ্যে নেই, অথচ এটা প্রচার করা হচ্ছে। এটাকে লিঙ্ক করা হয়েছে, প্রথম শ্রেণির ‘আমার বই’র সঙ্গে,’’ যোগ করেন মন্ত্রী।
 
মূল বইয়ের ছবি ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে দেখবেন অনেক বড় গাছ আছে শোয়া অবস্থায়, পরে তা আবার উপরে উঠেছে, সে রকম একটা গাছ দেখানো হয়েছে ছবিতে। সেখানে পা তুলে ছাগল কোনো খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করছে; ছোট আমগাছে উঠবার চেষ্টা করছে।
 
তবু এ জিনিসটাও দেওয়া ঠিক হয়েছে কিনা- সেটাও আমরা দেখবো, বলেন নাহিদ।

কিন্তু দুইটা ছবির মধ্যে মিল নেই দাবি করে তিনি বলেন, দেখেন কত রাত-দিন পার্থক্য তৈরি করা হয়। সারাদেশে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে।
 
এক পৃষ্ঠার ছবি মন্ত্রীর দফতর থেকে সংগ্রহ করে দেখা যায়, মূল বইয়ে গাছের গোড়ায় একটি ছাগল থাকলেও ফেসবুকে পাওয়া ছবিতে দেখা যায় গাছের মগডালে একাধিক ছাগল। তখন মন্ত্রী বলেন, এভাবেই চালানো হচ্ছে অপপ্রচার।  
 
হিন্দু রিলিজিওন অ্যান্ড মোরাল এডুকেশন বইয়ের শেষ প্রচ্ছদে ‘ডু নট হার্ট এনিবডি’ লেখার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা হৃদয় না। এটা আঘাত (hurt) করা।
ফেসবুকে যেভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, ছবি: সংগৃহীত
 
“এতো বড় ধরনের লেখার মধ্যে যিনি সম্পাদক তার অবশ্যই দেখার দায়িত্ব ছিল। এই বিষয়টিকে আমরা ক্ষমা করতে পারি না…,” বলেন নাহিদ।
 
আর তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতা ভুল করে ছাপানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যিনি এডিট করেছেন তিনি যোগ্য না, এটা প্রমাণিত হয়। শব্দ, বানান ভুল হতে পারে- কিন্তু এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এই ভুল তার অযোগ্যতা, এটাকে ক্ষমা করতে পারি না।
 
বড় বড় ভুলগুলোর বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ভুলগুলো এলে হয় কাগজ পাঠিয়ে দিতে পারি বা কবিতাটি আবার ছাপিয়ে রিপ্লেস করে দিতে পারি। আম গাছেরটা দেওয়া ঠিক হয়েছে কিনা দেখবো।
 
তবে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে না বলে দাবি করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এমআইএইচ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।