ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভর্তুকি নেই, শিক্ষার্থীর টাকায় চলছে জবি ক্যান্টিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
ভর্তুকি নেই, শিক্ষার্থীর টাকায় চলছে জবি ক্যান্টিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যান্টিন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: প্রশাসনের ভর্তুকি ছাড়াই সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের টাকায় চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যান্টিন। পুরো ক্যাম্পাসে তিনটি ক্যান্টিন থাকলেও একটিতেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় না কোনো ভর্তুকি। ফলে বেশি দামে বাজে খাবার কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। 

সকাল ও দুপুরের খাবারের জন্য ক্যাম্পাসে অবস্থিত তিনটি ক্যান্টিনের ওপর নির্ভরশীল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজার শিক্ষার্থী।  

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট তিনটি ক্যান্টিন রয়েছে।

এর মধ্যে অবকাশ ভবনে অবস্থিত ক্যান্টিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে চালু। যা সেন্ট্রাল ক্যান্টিন হিসেবে পরিচিত। এরপর বছরখানেক আগে কলা অনুষদে স্থাপিত হয় রেভেনাস প্লাস ও বিজনেজ স্টাডিজ ভবনে শিক্ষক লাউঞ্জের সামনে অবস্থিত টিচার্স ক্যাফে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই তিন ক্যান্টিনে ব্যবহৃত গ্যাস বিদ্যুৎ বিল ছাড়া আর কোনো ধরনের ভর্তুকি বা সুবিধা দেওয়া হয় না।  

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, জবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ক্যান্টিনে কোনো ভর্তুকি দেয় না। আমরা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তাদের বেশিরভাগ পরিবার খুব বেশি অসচ্ছল। এক্ষেত্রে ক্যান্টিনে প্রশাসন যদি কিছুটা হলেও ভর্তুকি দেয়, তাহলে আমরা কিছুটা হলেও কম দামে ক্যান্টিন থেকে খাবার খেতে পারতাম। আমরা আশা করি প্রশাসন ক্যান্টিনে ভর্তুকি দিয়ে খাবারের দাম কমাবে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন ব্যাচ ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোনি খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে খাবারের দাম আর আমাদের ক্যান্টিনের খাবারের দাম প্রায় সমান। কিন্তু মাঝে মাঝে একটানা ক্লাস থাকায় ক্যান্টিনেই বেশি দামে বাজে খাবার খেতে হচ্ছে। থাকি মেসে তার ওপর এত দাম দিয়ে খাবার কিনে মাস শেষে করুণ অবস্থায় দিনাতিপাত করতে হয়।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যান্টিনক্যান্টিনে খাবারের উচ্চদাম প্রসঙ্গে জবি শাখা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মেহরাব আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, আবাসনহীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষার্থীকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটি মাত্র ক্যান্টিনের ওপর নির্ভর করে চলতে হয়। ক্যান্টিনে খাবারের নিম্নমান ও দাম বেশি হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে ক্যান্টিনের খাবারের দাম কমালে এবং মান বাড়ালে হাজার হাজার শিক্ষার্থী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

জবির অবকাশ ভবনে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ইজারাদার/ ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ক্যান্টিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তুকি হিসেবে শুধু কারেন্ট আর গ্যাস বিল দিতে হয় না। তাছাড়া প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৮ থেকে ২০জন কর্মচারীর বেতন ছাড়াও তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় ক্যান্টিনের খাবার বিক্রি করে।  

জবি ছাত্রকল্যাণ পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ক্যান্টিনের খাবারের দাম সহনীয় রয়েছে। ক্যান্টিনে ভর্তুকি হিসেবে তার (আমজাদ) কাছ থেকে ক্যান্টিনের ইজারা বাবদ কোনো ভাড়া নেওয়া হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গ্যাস, পানি ও কারেন্ট বিল দেওয়া হচ্ছে। তার কর্মচারীরা ক্যান্টিনে রাতযাপন করছে সেটাও আমরা ফ্রিতে দিয়েছি। আর কি ধরনের ভর্তুকি দেওয়া লাগবে আপনি বলেন, আমি কি এখন ক্যান্টিনের জন্য চাল, ডাল কিনে দিব? কোন বিশ্বববিদ্যালয় চাল ডাল কিনে দেয়? প্রশ্ন রাখেন তিনি।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখন কোন মন্তব্য করব না। আপনি আগামীকাল আমার অফিসে আসেন। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
ডিআর/পিসি

** ক্যান্টিনে নজর নেই জবি প্রশাসনের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।