২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর পুলিশের কাছ থেকে মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। এরপর সাড়ে চার মাসেও মামলার আর কো অগ্রগতি হয়নি।
রোববার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ড. রেজাউলের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ আমাদের যা বলছে তাই বিশ্বাস করতে হচ্ছে। এর বাইরে আমাদের করার কিছু নেই। তারা যা জানাচ্ছে, তাই জানতে পারছি।
বিচার শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মূল আসামিদের একজনকেও পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি। আমরা দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, ড. রেজাউল হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করতে পরিবার ও বিভাগের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও তা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর এএফএম মাসউদ আখতার বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত তদন্ত কাজ ও চার্জশিট দেখে আমরা সন্তুষ্ট। তবে বিচার শুরু না হলে আশ্বস্ত হতে পারছি না। পরিবার ও আমাদের পক্ষ থেকে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তরের আবেদন করা হয়েছে কয়েক মাস আগে। তবে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না জানি না।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তমাশ্রী দাস বাংলানিউজকে বলেন, এতো আলোচিত একটি হত্যা মামলার বিচার এখনো শুরু না হওয়া হতাশাজনক। শেষ পর্যন্ত বিচার হবে কি না সেটা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
ড. রেজাউল করিম হত্যা মামলায় আট জঙ্গিকে অভিযুক্ত করে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রাজশাহীর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকতা রেজাউল সাদিক।
রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুস সালাম বাংলানিউজকে জানান, অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া রাইটার, মুক্তমনা, প্রগতিশীল ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিংয়ের অংশ হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমকে হত্যা করে জঙ্গিরা। অভিযুক্ত আটজনের মধ্যে মাসকাওয়াত হাসান সাকিব ওরফে আবদুল্লাহ, আব্দুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ কারাগারে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শরিফুল ইসলাম পলাতক। অপর তিন জঙ্গি খাইরুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক হাসান ও ওসমান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন।
আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করলেও এখনো অভিযোগ গঠন না হওয়ায় বিচার শুরু হয়নি বলেও জানান তিনি।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক রেজাউল হত্যার এক বছর পূর্তিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। দ্রুত বিচারের দাবিতে সোমবার সকাল ৯টায় বিভাগের উদ্যোগে র্যালি ও সমাবেশ করা হবে। সকাল ১০টায় একই দাবিতে সিনেট ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে রাবি শিক্ষক সমিতি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল নগরের শালবাগান এলাকায় বাসার কাছে অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তার ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদী হয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
আরবি/এসআই