বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।
জনমানব শুন্য কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরির সামনে প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে দেখা মিললো জামাল উদ্দিন নামে একজনের সঙ্গে।
লাইব্রেরি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিকেল ৫টার পর আসতে হবে। তার আগে লাইব্রেরি খোলা হবে না। ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে লাইব্রেরি।
বিকেল ৫টা। আবারো কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরিতে। এবার দেখা মিললো বেশ কয়েকজন মানুষের সঙ্গে। তারা অবসর সময় কাটাতে বসে আছেন লাইব্রেরি চত্বরে। ইতোমধ্যেই লাইব্রেরির দরজা খোলা হয়েছে। তবে সেখানে কোনো কর্মকর্তা নেই। আছেন সেই পিয়ন কাম নাইটগার্ড জামাল উদ্দিন।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, এখানে একজন লাইব্রেরিয়ান, দুইজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান, একজন পিয়ন ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন।
তাদের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু লাইব্রেরিয়ান আসেন। তাছাড়া সহকারী লাইব্রেরিয়ান গত বছরের ১ জুন থেকে ছুটিতে আর আরেকজন চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ছুটিতে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আসেন মাঝেমধ্যে। তবে চলতি মাসের হাজিরা খাতা দেখে জানা গেল তিনি একদিনও আসেননি। সেক্ষেত্রে জানা গেল তিনি একদিনেই নাকি পুরো মাসের স্বাক্ষর করবেন।
জামাল উদ্দিন আরো বলেন, এখানে তো লোকজন বেশি আসে না। যারা আসেন তারা শুধু পত্রিকা পড়ার জন্যই আসেন। ২০০০ সাল থেকে তো বইপড়ার লোক দেখায় যায় না। আর ভবনের অবস্থাও খুর একটা ভালো নয়, পুরোনো হয়ে গেছে। আধা ঘণ্টা পরে লাইব্রেরিতে আসলেন লাইব্রেরিয়ান শওকত হায়াত।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, আসলে অর্থের অভাবে লাইব্রেরি ভবনটা সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া এখন ইন্টারনেটের যুগ, মানুষ বই পড়তে বেশি আর আসেন না। ইন্টারনেটেই সব কাজ সারে।
তিনি আরো জানান, লাইব্রেরিতে বর্তমানে ২১ হাজারের মতো বিভিন্ন ধরনের বই, ৪০টা আলমারি, ৩০-৪০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থাও রয়েছে।
জামাল উদ্দিন জানান, লাইব্রেরিতে বর্তমানে জাতীয় দৈনিক ৮টি ও স্থানীয় ২টি পত্রিকা নেওয়া হয়। তবে এখানে কম্পিউটার ও ইন্টানেটের কোনো ব্যবস্থা নেই। পাঠকদের হাজিরা বইও নেই।
সহকারী দুই লাইব্রেরিয়ানের ছুটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা অসুস্থতা জনিত কারণে বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
আরএ