পাসের হার কমাকে স্বাভাবিক ভাবে নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (০৪ মে) সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন।
এবার কম পাস করার বিষয়টি তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিবারের মতো এবারো ২৩টি বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করেছি। সব কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে, নকলমুক্ত ভাবে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি।
তিনি বলেন, এবার একটি বড় বিষয়, অন্যান্য বছরের তুলনায় পাসের হার কম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন খাতা যথাযথভাবে যেন মূল্যায়ন হয়, এটাও একটা বড় কারণ।
কম পাসকে স্বাভাবিক ভাবে নেয়ার অনুরোধ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের কাছে খুবই স্বাভাবিক এবং আমরা এজন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু যারা শুনে অভ্যস্ত তাদের কাছে একটু বিস্ময় মনে হতে পারে। এটাই আমাদের অগ্রগতি, এটা সবাইকে স্বাভাবিক নিতে আমি অনুরোধ জানাবো।
আগের উত্তরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা দেখতে পাই যে খাতা দেখতে দেই শুধু মাত্র পরীক্ষক খাতা নিয়ে নেন। এবং তিনি এসে ফলাফল দিয়ে যান। আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখা যায় তারা ভালো করে খাতা দেখেন না।
তিনি বলেন, যিনি প্রধান পরীক্ষক তিনি আসলে খাতা দেখেন না। ...আবার যিনি খাতা দেখেন তিনিও ভালো ভাবে দেখেন না। …অনেক সময় ওজন করে নম্বর দিয়ে দেন।
যথাযথভাবে পরীক্ষার খাতা দেখা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা পর্যালোচনা বোর্ডের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা পর্যালোচনা করে দেখেছেন। একই খাতা ২০টা ফটোকপি করে ২০জন শিক্ষককে দেই। সবাই আলাদা নম্বর দিয়েছেন। ২০ জনে আলাদা আলাদা নম্বর দিয়েছেন। দেখা গেলো নম্বরে কত পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে।
এটা নিয়ে তিন বছর ধরে আমরা কাজ করেছি। প্রধান পরীক্ষকদের আমরা প্রশিক্ষণ দেই। তাদের মাধ্যমে সব পরীক্ষককে ট্রেনিং দেয়া হয়েছে।
নাহিদ বলেন, সব শিক্ষার্থীদের খাতা শিক্ষকরা ঠিক মতো দেখার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আগে সবাইকে ব্রিফ করে দেন এভাবে খাতা দেখবেন। এভাবে নম্বর দিবেন, যা ঠিক নম্বর দিবেন বেশিও দেবেন না কমও দেবেন না।
‘সাড়ে ১২ শতাংশ খাতা আমরা যে কোনো ভাবে যাচাই করি। এর মধ্যে ভালো খাতাও দেখেছি, খারাপ খাতাও দেখেছি। ’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সব কিছু করার ফলে এবার খাতা দেখার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি, কম নম্বর দিয়ে দেয়া, বেশি নম্বর দিয়ে দেয়ার সুযোগ ছিলো না। এর ফলে আমাদের পরীক্ষার ফলাফলে কিছুটা প্রভাব পড়ছে।
‘আমাদের সমমানের খাতা দেখা এবং এক্ষেত্রে তিন বছরের যে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, প্র্যাকটিস করে তা বাস্তবে প্রয়োগ করলাম, তাতে খাতা দেখার ক্ষেত্রে একটা সমমান হয়েছে। এটি ফলাফলে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে, পাস হারও কিছুটা কমেছে। কিন্তু এ একটা নিয়মের মধ্যে বা মানের মধ্যে নিয়ে আসতে পেরেছি।
মাধ্যমিক (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে এবার পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাসের হার গত বারের চেয়ে ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ কম। গতবার পাসের হার ছিলো ৮৮.২৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৭
এমইউএম/এসএইচ