এভাবে বাবার কোলে চেপেই শিক্ষায় আরও এক ধাপ পেরুলো প্রতিবন্ধী এই মেয়েটি।
মানবিক বিভাগ থেকে নাইছ খাতুন ৩ দশমিক ৫৫ গ্রেড পেয়ে কৃতকার্য হয়।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার বহালগাছা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও আকতার জাহানের মেয়ে নাইছ খাতুন। বাবা পেশায় কৃষক, আর মা গৃহিণী।
বৃহস্পতিবার (০৪ মে) সকাল ১০টায় সারাদেশে একযোগে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
২০০১ সালে নজরুল ইসলাম ও আকতার জাহান দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় নাইছ খাতুন। জন্ম থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। এ বছর ধুনট এনইউ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো নাইছ খাতুন। সে বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মেয়েটির পা থাকলেও শক্তি নেই। এতে হেঁটে চলাফেরা করতে পারে না সে। কিন্তু অদম্য শক্তি রয়েছে তার। ভেতরে রয়েছে তীব্র মনোবল। তাই বাবার কোলে চড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছে। সহপাঠিদের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ডান হাত অচল হওয়ায় বাম হাতেই খাতায় কলম চালিয়েছে মেয়েটি।
নাইছ খাতুন বাংলানিউজকে জানায়, কারো বোঝা হয়ে সে বেঁচে থাকতে চায় না। সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। ভবিষ্যতে আদর্শ শিক্ষক হতে চায় সে। পরীক্ষার ফলাফলে ভীষণ খুশি।
বাবা নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবন্ধী হলেও মেয়ের পড়াশোনার প্রতি ভীষণ আগ্রহ রয়েছে। এভাবে মেয়ে আস্তে আস্তে একদিন উচ্চ শিক্ষা অর্জন করবে। ভাল কিছু করবে। এতে তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে। সবার মুখ উজ্জ্বল করবে। তিনি মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেজাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবন্ধী হলেও নাইছ খাতুন স্কুলে নিয়মিত আসতো। অথচ শারীরিক প্রতিবন্ধী না হওয়ার পরেও অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে অনিয়মিত। নাইছের বাবা তাকে কোলে করে স্কুলে রেখে যেতেন।
তিনি বলেন, মেয়েটির পড়াশোনার প্রতি অনেক আগ্রহ রয়েছে। সে ২০১৪ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ৩ দশমিক ৬৭ পেয়ে কৃতকার্য হয়। সে ভবিষ্যতে ভাল কিছু করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই প্রধান শিক্ষক।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৭
এমবিএইচ/জিপি/জেডএম