ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সবাই বিদ্যালয়ে এলে আনন্দটা বাঁধ ভাঙতো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৭
সবাই বিদ্যালয়ে এলে আনন্দটা বাঁধ ভাঙতো স্কুলে এসে রেজাল্ট দেখছেন জনা ৩ শিক্ষার্থী। ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: স্কুলগুলোর আঙিনায় ভিড় নেই। প্রত্যাশিত ও কাঙ্খিত ফলাফলের পরেও গলা জড়িয়ে জয়ধ্বনি নেই মেধাবীদের। ঘটা করে নেই সাফল্যের মিষ্টি মুখের পর্ব।

শিক্ষক-অভিভাবকদের বয়স ভুলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিশুর মত আনন্দ ভাগাভাগি করার দৃশ্যও পড়েনি চোখে।

অবারিত আনন্দের ফল্গুধারার পরিবর্তে নীরবতা শিক্ষা নগরী ময়মনসিংহের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

মেধাবীদের আবেগ-উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়ার মূল কারণ ঘরে বসেই এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল।

অথচ বছর কয়েক আগেও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকদেরও আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠার দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর জিলা স্কুল, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ গালর্স ক্যাডেট কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র।

স্কুল শিক্ষকরা জানান, কৃতি অনেক শিক্ষার্থীই স্কুলের পথে পা মাড়াননি। মূলত ঘরে বসেই ইন্টারনেটে ফলাফল জানতে পারার সুযোগে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই উৎসব আনন্দের দিনে আর স্কুলমুখী হয়নি।

এতে নিজের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে মেধাবীদের আবেগ-উচ্ছ্বাসেও ভাটা পড়েছে।

শিক্ষা নগরী ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্কুল ঘুরে দেখা গেলো, দুপুরেই স্কুলগুলোর দেয়ালে সাঁটিয়ে দেয়া হয় পরীক্ষার ফলাফল।

ওই সময়ে ফলাফল জানতে হুমড়ি খেতে দেখা গেলো কয়েক শিক্ষার্থীকে।  রেজাল্টের পর প্রাণহীন স্কুল প্রাঙ্গণ।  ছবি: অনিক খান

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম কেন জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলে এসে ফলাফল জানার দিন তো আর এখন নেই। সবার হাতে হাতে আছে স্মার্টফোন।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবাই জেনে নিতে পারে নিজেদের কাঙ্খিত ফলাফল।

একই রকম কথা জানালেন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী জান্নাতুল হাফসা জ্যোতি। এ মেধাবীর ভাষ্যে, মেধাবী সবাই যদি বিদ্যালয়ে আসতো তবে আনন্দটা বাঁধ ভাঙতো। এখন ভাল ফলাফল করার পরেও সেই আনন্দ-উদ্দীপনা চোখে পড়ে না।

ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের এক মেধাবীর বক্তব্য এমন- ‘ইন্টারনেটে ফল জানতে পারলেও স্কুলে এলেই কেবল সবার সঙ্গে দেখা হয়। প্রযুক্তির দাপট আমাদের জীবনে গতি বাড়ালেও আবেগ-অনুভূতিকে ভোঁতা করে দিচ্ছে।

তবে শিক্ষকদের কদমবুচি করে তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার জায়গা বিদ্যালয় আঙিনা।

উদ্ভাসিত সাফল্য পেলেও বরাবরের মতো এবারো নীরব ছিল ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাস। এ কলেজের ৫৩ শিক্ষার্থীর সবাই পেয়েছে জিপিএ-৫। এ কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ময়মনসিংহ নগরীর বাইরের।

পরীক্ষার ফলাফল শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জেলা থেকেই সংগ্রহ করেছে। আবার কেউ বিদ্যালয়ে ফোন করে ফলাফলের খোঁজ নিয়েছে।

প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সময়ে অনলাইনে ফলাফল জানাটা একেবারেই সহজ। ফলে বিদ্যালয়ে আর ভিড় হয় না জানালেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের এক শিক্ষক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৭
এমএএএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।