অনুবাদ ও ব্যাখ্যা শেষে ২০০৩ সালে তাঁর স্ত্রী মমতাজ বেগম বইটি প্রকাশ করেন। এতে অনুবাদকের বক্তব্য লিখেন জেহাদুল ইসলাম।
গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণে গ্রন্থটির স্বত্বাধিকারী মমতাজ বেগমের অনুমতিও নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে মমতাজ বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বইটির দ্বিতীয় সংস্করণের জন্য আমার পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। আমার স্বামীর নাম কেন বাদ দেয়া হয়েছে সেটা আমি সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করবো।
গ্রন্থটির দুটিই সংস্করণের কপিই বাংলানিউজের হাতে রয়েছে। গ্রন্থ দুটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রথম সংস্করণে বাংলা ভাষার পাশাপাশি ফারসি ভাষায় ভূমিকা লেখা হয়। বইটির প্রকাশক মমতাজ বেগম তাঁর স্বামী জেহাদুল ইসলামকে নিয়ে ‘অনুবাদক পরিচিতি’ শিরোনামে একটি লেখা লেখেন। কিন্তু ২০১১ সালে দ্বিতীয় সংস্করণে প্রকাশিত বইয়ে এই দুটি লেখাই বাদ দেয়া হয়। বইটির কভার পৃষ্ঠায় অনুবাদক ও সম্পাদক হিসেবে শধু ড. সাইফুল ইসলাম খানের নাম লেখা হয়। কিন্তু প্রথম সংস্করণে কভার পৃষ্ঠায় দুইজনের নামই ছিল।
বইটিকে নিজের নামে চালানোর জন্য সূক্ষ্ণ জালিয়াতির আশ্রয় নিযেছেন সাইফুল ইসলাম। প্রথম সংস্করণের অনুবাদকের বক্তব্য লিখেছেন জেহাদুল ইসলাম একাই। কিন্তু দ্বিতীয় সংস্করণে মূল অনুবাদকের ভূমিকা নিয়ে নিজের নাম যোগ করেন। পরে ছোট করে জেহাদুল ইসলামের নামটি উল্লেখ করেন। কিন্তু পুরো লেখাটাই নেয়া হয়েছে প্রথম সংস্করণে জেহাদুল ইসলামের লেখা থেকে। শুধু তিনি চার থেকে পাঁচ জায়গায় কিছুটা পরিবর্তন করেছেন।
বইটির প্রথম সংস্করণের ভূমিকায় একাদশতম লাইনে লেখা ছিল: ‘লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে’ --এর স্থলে সাইফুল ইসলাম লিখেন: ‘লক্ষ লক্ষ মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে। ’ তারপর ২২ তম লাইনে সামান্য বিষয় যোগ করেন। ভূমিকার শেষ পৃষ্ঠায় এসে জেহাদুল ইসলামের বিভিন্ন ব্যক্তিদের নিকট কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে লেখা অংশটুকু বাদ দেন। এছাড়া সম্পূর্ণ লেখাটি ছিল অবিকল আগের মতোই।
প্রথম সংস্করণে বইটি মমতাজ বেগম কর্তৃক খাজা মঞ্জিল, ৫৯২, উত্তর শাহজাহানপুর থেকে প্রকাশিত হয়। আর দ্বিতীয় সংস্করণটি প্রকাশ করে সদর প্রকাশনী। তবে প্রথম সংস্করণের প্রকাশিকা মমতাজ বেগম থেকে এই রকম নাম দেয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের অনুমতি নেয়া হয়নি।
জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা প্রকাশকদের কাজ।
তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। সেটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ ঘণ্টা: ১৭৫৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
এসকেবি/জেএম