ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বেতনের গ্রেড ব্যবধান কমাতে চান সহকারী শিক্ষকরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
বেতনের গ্রেড ব্যবধান কমাতে চান সহকারী শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের যোগ্যতা এক হলেও বেতন বৈষম্যে প্রধান শিক্ষকদের চেয়ে তিন ধাপ পিছিয়ে সহকারী শিক্ষকরা। নতুন স্কেল অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়া হলে সহকারী শিক্ষকদের সাথে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াবে ৪ ধাপ।

দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষকরা তাই গ্রেড ব্যবধান ১ ধাপ কমিয়ে ১১তম গ্রেডে বেতন স্কেল করার দাবিতে আন্দোলন করছেন।

প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন স্কেল অনুযায়ী, একজন প্রধান শিক্ষক প্রথম যোগদান করে ১২তম গ্রেডে পান ১১ হাজার ৩০০ টাকা।

অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকরা পান ১৫তম গ্রেডে ৯ হাজার ৭০০ টাকা। প্রশিক্ষণ শেষে প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে ১২ হাজার ৫০০ টাকা পান অপরদিকে সহকারী শিক্ষক পান ১৪তম গ্রেডে ১০ হাজার ২০০ টাকা।  

শিক্ষকতার ১০ বছর পূর্ণ হলে প্রধান শিক্ষক ১০তম গ্রেডে ১৬ হাজার টাকা পান আর সহকারী শিক্ষক পান ১৩তম গ্রেডে ১১ হাজার টাকা। ১৬ বছর পূর্তিতে প্রধান শিক্ষক ৯ম গ্রেডে পান ২২ হাজার টাকা সেখানে সহকারী শিক্ষক পান ১২তম গ্রেডে ১১ হাজার ৩০০ টাকা।

সহকারী শিক্ষকরা মনে করেন, একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন একজন সহকারী শিক্ষক ষোল বছর শেষে সেই স্কেলে চাকরি শেষ করবেন এটা অমানবিক।

জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বেতন স্কেল চালু হয় ১৯৭৩ সাল থেকে। তখন থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতনের গ্রেড ছিল সমান। ১৯৯১ সালে এসে প্রধান শিক্ষকদের সহকারী শিক্ষকদের চেয়ে বেতনের গ্রেড ১ ধাপ বাড়ানো হয়। যা ২০০৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর ছিল। ২০০৬ সালে বেতনের গ্রেড ২ ধাপ বাড়ানো হয়। এটা কার্যকর থাকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত।  

সর্বশেষ ২০১৫ সালে বেতনের গ্রেড ১ ধাপ বাড়ানো হলে প্রধান শিক্ষকদের সাথে বেতনের গ্রেড ব্যবধানে তিন ধাপ পিছিয়ে যায় সহকারী শিক্ষকরা।

জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৭৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর স্কেলের বাস্তবায়ন করতে হবে। যেখানে প্রধান শিক্ষকদের সাথে আমাদের বেতনের গ্রেড ব্যবধান ১ থাকবে অর্থাৎ তারা দশম গ্রেডে আর আমরা ১১তম গ্রেডে বেতন বাস্তবায়ন চাই।

সহকারী শিক্ষকদের বেশিরভাগকে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে শিক্ষকতা জীবন শেষ করতে হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি তপন কুমার মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে প্রধান শিক্ষকের পদ আছে ৬৩ হাজার। আর সহকারী শিক্ষকের পদ আছে সাড়ে তিন লাখ। এদের মধ্যে ১১ ভাগ শিক্ষক স্ববেতনে পদোন্নতি পান। বাকি শিক্ষকদের সহকারী হিসেবেই অবসর নিতে হয়। বেতনের এই ব্যবধান সহকারী শিক্ষকদের আর্থিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু আমাদের জন্য কোনো কিছু করা হয়নি।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতনের গ্রেড ব্যবধান কমানোর দাবিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
এসকেবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।