ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেরোবিতে ভর্তি জালিয়াতি বিরোধী মানববন্ধন পণ্ড

বেরোবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৮
বেরোবিতে ভর্তি জালিয়াতি বিরোধী মানববন্ধন পণ্ড বেরোবিতে মানববন্ধন পণ্ড

বেরোবি (রংপুর): বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষা বর্ষে প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা উন্মোচনের পরিবর্তে তা ধামাচাপা দিতে উঠে পরে লেগেছে প্রশাসন।

এরই অংশ হিসেবে তদন্ত ও জালিয়াতদের বিচারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা মানববন্ধন ছাত্রলীগের সহায়তায় পণ্ড করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  

সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে ক্যাম্পাসে পূর্বঘোষিত মানববন্ধনে সুশৃঙ্খল ও সাড়িবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো শিক্ষার্থীরা। এতে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় সাড়ে ৩শ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল কয়েকজন নেতাকর্মীসহ উপস্থিত হন। এর কিছুক্ষণ পরেই মানববন্ধনস্থলে আসেন প্রক্টর আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান। এ সময় তারা কেন মানববন্ধন? কিসের মানববন্ধন? ইত্যাদি বলে প্রত্যেকেই মানববন্ধন বন্ধ করতে বলেন। অনুমতি না নেওয়ার অযুহাত দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করতে চাইলে তাতেও বাধা দেওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়ে মানববন্ধন বন্ধ করেন তারা।

মানববন্ধন কর্মসূচির সঞ্চালক বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তি জালিয়াতি করে একটি চক্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করছে। আর এ জালিয়াত চক্রের শাস্তির দাবিতে যখন মানববন্ধন করছি তখনই প্রশাসন বাধা দিচ্ছে। এটা সত্যি দুঃখজনক।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক অভিযোগ করে বলেন, তাবিউর রহমা স্যার এখানে কেন আসবেন? উনি প্রশাসনের কে? কোনো প্রটোকলে তিনি কারণ জানতে চাইবেন? আমরা তো দেশ বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কিছু করছি না। তাহলে বাধা কেন? কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়ার ভয় নাতো?

আরেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লোক দেখানো অনুসন্ধান কমিটির কোনো কাজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তো মূল হোতাদের বের করা যায়। উল্টো ধামাচাপা দিতে জোর প্রচেষ্টা কেন চালানো হচ্ছে? জালিয়াতির বিরুদ্ধে কথা বললেই বাধা নয়তো পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন? 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী পোমেল বডুয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, মানববন্ধনে বাধা দেওয়া হবে এমনটি আমরা চিন্তাই করতে পারিনি। এর তীব্র নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নীল দলের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসনের ভেতরে ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান করার বিষয়ে অনুমতির একটা ব্যাপার থাকতে পারে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন সময়ে অনেক অনুষ্ঠানের অনুমতি নিতে দেখিনি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ যৌক্তিক দাবির সঙ্গে প্রশাসনের একমত থাকা নৈতিক দায়িত্ব ছিলো। কিন্তু প্রশাসন তা না করে এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এতে তারা কি প্রমাণ করতে চাইছেন তা বোধগম্য নয়।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু তারা (মানববন্ধন আয়োজকরা) মানববন্ধনের অনুমতি নেয়নি তাই তা স্থগিত করতে বলেছি। আমরা চাই সব কিছু একটা সিস্টেমে আসুক।

বাধা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তাবিউর রহমান বলেন, অনুমতি না নেওয়ায় আমি জানতে চেয়েছি। আর প্রত্যেক শিক্ষক সহকারী প্রক্টরের ক্ষমতা ধারণ করেন।

প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) ড. ফরিদ উল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু মানববন্ধনের অনুমতি নেওয়া হয়নি তাই তা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৭
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।