রোদ, বৃষ্টি উপেক্ষা করে ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনে’র ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের উত্তর পাশে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন। রাত-দিন এভাবে অনশনের ফলে ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিক্ষকেরা।
বুধবার (০৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় গিয়ে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানান।
জানা যায়, ইতোমধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫০জন শিক্ষক-কর্মচারী।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ২৩জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২২জন চিকিৎসা নিয়ে পুনরায় অনশনে যোগ দিয়েছেন এবং একজন বর্তমানে চিকিৎসাধীন। এমন পরিস্থিতিতে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভুষণ রায়ও চিকিৎসা নিয়ে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার জন্য বেসরকারি স্কুল ও কলেজের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ জারি করা হয়েছে।
একই দিনে রাষ্ট্রপতি কার্যালয় থেকে উপ-সচিব জান্নাতুল নাঈম স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বরাবর দেওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের স্মারকলিপি অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দেওয়া হবে।
কিন্তু অনশনকারীদের অনেকেই বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তাদের দাবি মেনে না দেওয়ার পর্যন্ত এ আমরণ-অনশন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
আন্দোলনকারীরা জানান, এ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে মঙ্গলবার (০৩ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহম্মেদের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাত করেন।
সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহম্মেদ আন্দোলন ছেড়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার কথা জানান। প্রতি উত্তরে শিক্ষক নেতারা বলেন, ইতোপূর্বে আমাদের ২৬ বার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরেছিলাম। কিন্তু এর সুফল পাই নি। তাই আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, দীর্ঘ ১৫-২০ বছর এমপিওভুক্ত না হওয়ায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাইয়ের এমপিওভুক্তির পর তিন বছর সময় দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে সক্ষমতা অর্জনে ব্যর্থ হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়া আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্যও আবেদন জানিয়েছি। আশা করি প্রধানমন্ত্রী দ্রুতই আমাদের সাক্ষাত দেবেন এবং এমপিওভুক্তির নির্দেশ দেবেন।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোকারম হোসেন জানান, আমাদের দাবি ৫ হাজার ২৪২টি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে (প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী) প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একযোগে এমপিওভক্তি করতে হবে।
এর আগে বেতন-ভাতার দাবিতে টানা ১৪দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে একদিন প্রতীকী অনশনের পর রোববার (২৪ জুন) নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে এ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৮
এমএএম/ওএইচ/