নড়িয়া উপজেলার মশুরা গ্রামের ফারুক আহাম্মেদ খানের ছেলে। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল জোহরের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় বিঝারি এলাকায় বোরো ক্ষেতে মাটিতে পড়ে থাকা পল্লী বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে সিয়ামের দু’হাত পুড়ে যায়।
দু’হাত হারালেও সিয়াম থেমে থাকেনি। চালিয়ে গেছে তার লেখাপড়া। শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এবার।
নড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল খালেক বলেন, সিয়াম একজন মেধাবী ছাত্র। পল্লী বিদ্যুতের ছিঁড়ে যাওয়া তারে জড়িয়ে তার দু’টি হাতই নষ্ট হয়ে যায়। তার পরেও সে লেখাপড়া ছাড়েনি। আমরা চাই পড়াশোনা শেষ করে সে ভালো একটি চাকরি করে জীবনটা গড়ুক।
সিয়াম আহম্মেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, অন্যের বোঝা না হয়ে লেখাপড়া শিখে বড় হয়ে প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়াবো। মানুষের মতো মানুষ হবো এ আমার স্বপ্ন। আমি অন্যের সহায়তায় পরীক্ষা দিয়ে ভালো রেজাল্ট করেছি। এটা আমার জন্য অনেক কষ্টের। আমাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ টাকা পেলে আমার জন্য অনেক উপকার হতো।
সিয়ামের মা নাজমা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে লেখাপড়া করাতে হচ্ছে। হাত অকেজো হওয়ার কারণে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। আমার ছেলেকে যেন সমাজে অবহেলা না করা হয় সেজন্য যতদূর সম্ভব তার লেখাপড়া চালিয়ে যাবো।
বাবা ফারুক আহাম্মেদ খান বলেন, আমি গরিব মানুষ। ধার দেনা করে ছেলের চিকিৎসা করতে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি আর পারছি না। এতো কষ্টের পরেও ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি। উচ্চ আদালত থেকে পল্লীবিদ্যুৎকে ৫০ লাখ টাকা দিতে বললেও এখনো কোনো টাকা পাইনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
এসআই/এএ