জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় প্রকাশনা জালিয়াতির অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয় ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনকে ও যৌন হয়রানির দায়ে নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল হালিম প্রামাণিককে ‘তিরস্কার’ করে সিন্ডিকেট।
এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
উপায়ান্তর না দেখে শাস্তি ঘোষণার তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল জবি উপাচার্য মীজানুর রহমান নিজ ক্ষমতাবলে সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল হালিম প্রামাণিকের সাজা স্থগিত করে ঘটনা পুনরায় তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান।
তিনি জানান, ‘আব্দুল হালিম প্রামাণিকের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় নিয়ে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক শওকত জাহাঙ্গীরকে প্রধান করে পুনরায় তিন সদস্যের রিভিউ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ’ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদা আক্তার খানম।
এছাড়া আইন অনুযায়ী অভিযোগকারী নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম ও আব্দুল হালিম প্রামাণিকের পক্ষে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাকীকে প্রতিনিধি করা হয়েছে।
কিন্তু কমিটি গঠনের প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও তদন্ত কমিটির কোনো অগ্রগতি নেই। এখন পর্যন্ত অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত কাউকেই জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেনি কমিটি।
অভিযোগকারীরা বাংলানিউজকে জানান, আমরা আব্দুল হালিম প্রামাণিকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে বেশ সঙ্কিত। যৌন নিপীড়নের এমন গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে কেবল মাত্র 'তিরস্কার' নামক লঘু শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক শওকত জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে বলেন, তদন্তের নির্দেশ বিলম্বিত হওয়ায় তদন্ত দেরিতে শুরু হয়েছে। এখন তদন্ত চলছে। কবে নাগাদ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময়তো অবশ্যই লাগবে।
অভিযুক্ত আব্দুল হালিম প্রামাণিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনের নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যার কথা জানিয়ে ‘কথা বুঝতে পারছেন না’ দাবি করে কেটে দেন। জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
কেডি/ওএইচ/