ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

নতুন বইয়ের টানে সন্ধ্যার আগেই মাঠ ছেড়েছে ওরা…

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৯
নতুন বইয়ের টানে সন্ধ্যার আগেই মাঠ ছেড়েছে ওরা… ভাইবোন, প্রতিবেশী, সহপাঠী মিলে গোল হয়ে নতুন বইয়ের ছবি দেখছে ও পড়ছে

খুলনা: পৌষের কনকনে শীত, কুয়াশার চাদরে ঢাকা সন্ধ্যার প্রকৃতি। শীতে যবুথবু হয়ে পড়েছেন গ্রামের মানুষ। এর মধ্যেই প্রতিটি বাড়ির শিশু বিদ্যুতের আলো কিংবা আলো আধাঁরে মিটিমিটি বাতি জ্বালানো ঘরে মনযোগী হয়ে পড়াশোনায় ব্যস্ত।

যদিও এটা নিত্যঘটনা। তবুও মঙ্গলবার (০১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এসব শিশুদের পড়ার শব্দটা বেশি শোনা যাচ্ছে।

কেননা আজ ওরা নতুন বইয়ের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে পড়ছে।

রূপসা উপজেলার শ্রীফলতলা ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রাম ঘুরে শিশুদের পড়ার এমন কলকাকলি শোনা গেছে।

অভিভাবকরা জানান, নতুন বইয়ের টানে আজ শিশুরা খেলার মাঠ থেকে একটু তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরেছে। ভাইবোন, প্রতিবেশী, সহপাঠী মিলে গোল হয়ে নতুন বইয়ের ছবি দেখছে ও পড়ছে।

তারা আরও বলেন, ছেলে-মেয়েদের হাতে নতুন বই দেখে আমরা ভীষণ খুশি। আমাদের সময়ের গল্প ছিল ভিন্ন। বছরের শুরুর দিনে নতুন বই কেউই পাইনি। যদি পেতামও তা একটি কিংবা দু’টি। তখন আগের ক্লাসের বই পরের ক্লাসে দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। অথবা অভিভাবকরা পুরনো বই কিনে দিতো। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীরা হাতে নতুন বই পাচ্ছে।

বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে বই পাওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

মোছাব্বারপুর গ্রামের মো. জালাল নামের এক অভিভাবক বলেন, বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দিত তেমনি অভিভাবকরাও খুশি। নতুন বই পেয়ে বাচ্চারা আজ খেলার মাঠ থেকে আগে আগে ঘরে ফিরে এসেছে। এসেই নতুন বইয়ের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রাপ্ত পর্যন্ত কি কি আছে তা দেখছে ও পড়ছে। অন্যদিন হলে সন্ধ্যা পেরিয়ে যেতো, শিশুরা ঘরে আসতো না।

আইচগাতি ইউনিয়নের দেয়ারা গ্রামের ব্যবসায়ী জিয়াউল হক মিলন বলেন, বছরের প্রথম দিন বাচ্চারা নতুন বই পেয়ে সীমাহীন আনন্দ আর বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে ফেটে পড়েছে। তাদের এ উল্লাসে ভীষণ খুশি অভিভাবকরাও।

মোছাব্বারপুর আদর্শ রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রুদ্র জানায়, নতুন বইয়ের মজাই আলাদা। ঘ্রাণটাও দারুণ। যে কারণে সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে পড়তে বসেছি।

একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির মাহিম ও মনিরুল বলে, নতুন বইয়ের ছবি দেখতে খুব ভালো লাগে। কবিতা ও গল্প পড়তে বেশ মজা।

শ্রীফলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাশিদা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আজকে আমার স্কুলের আনুমানিক ২৭০ শিক্ষার্থী সবাই সেট ধরে নতুন বই পেয়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে উৎসব করে নতুন বই দিতে পেরে আমরা ভীষণ খুশি।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের একদিন পর বাচ্চারা বই পাবে ভাবতেও পারিনি। বছরের প্রথম দিনেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই দিতে পারা সরকারের একটি বড় অর্জন।

এ বছর খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৯ লাখ ১১ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই কোটি ৪২ লাখ ৬২ হাজার বই বিতরণ করা হয়েছে। আর খুলনা জেলায় দুই লাখ ৫৮ হাজার ২৬৩ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৩ লাখ ৭৯ হাজার বই বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৯
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।