জাবি: ‘ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন করলেই পোষ্য কোটায় তাদের ভর্তি করতে হবে’ এই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট ও ডিনের কার্যালয়ে ভাংচুর করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারি ও অফিসার্স সমিতি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তারা বিভিন্ন অনুষদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে গিয়ে জমায়েত হয়।
রেজিস্ট্রার ভবনে এসে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে তাদের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারি ইউনিয়ন এর সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা কোন প্রকার আশ্বস্ত না করায় আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। ’
ডিনদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাদের লাগাম ছাড়া করবেন না তাহলে আমরা আপনাদের ছাড়ব না। ’
এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে ন্যক্কারজনক কাজ করবেন না।
ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারি সমিতির সভাপতি আব্বাস তালুকদার বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা হয়নি। পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা হলে আমাদের সন্তানরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পেত। ’
আবেদন পত্র তুললেই ভর্তি সুযোগ দিতে হবে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির সভাপতি ড. হান্নান জানান, অন্যান্যবার সাধারণভাবে ভর্তি পরীক্ষায় গ্রেজ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু এইবার তা করা হয়নি। আমাদের সন্তানরা ভর্তির সুযোগ পায়নি তাই আন্দোলন করছি।
এ দিকে অনুষদের কার্যালয় ভাংচুর সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাজেদ আশরাফ করীম বাংলানিউজকে জানান, আমি ভিতরে বসে ভর্তিচ্ছুদের অভিভাবকদের সঙ্গে বসে আলাপ করছি এমন সময় তারা এসে দরজায় ধাক্কা-ধাক্কি শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত দরজা না খোলায় তারা বাহিরের নেম প্লেটটা নিয়ে গেছে।
কর্মচারি, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তাদের এই ভর্তি পরিক্ষা সম্পর্কে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে ড. সাজেদ আশরাফ করীম বলেন, ‘অন্যান্যবার পাশের সংখ্যা বেশি থাকত তাই নিয়ম অনুযায়ী ফলাফল দেওয়া হত। কিন্তু এই শিক্ষাবর্ষে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে শুধু মাত্র ৭০৯ জন মেয়ে ও ২৫৩২ জন ছেলে পাশ করেছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী ফলাফল প্রদান করা হয়নি। যারা পাশ করেছে সবারই নাম ফলাফলের তালিকায় দেওয়া হয়েছে। ’
ভর্তি পরিক্ষা সম্পর্কে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. অসিত বরন পাল বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যারাই অভিযোগ করেছে তাদের সকলে অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খাতা খুঁজে বের করে পুনঃ যাচাই করি এবং যে কারণে তারা অভিযোগ করেছে তার জবাব দেই। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেব। যারা ভাংচুর করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
অবস্থান কর্মসূচিতে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আগামী রোববার সুপারিতলায় আবার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১১