ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

মধ্যরাতে ইবি ছাত্রলীগের উত্তেজনা, গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৯
মধ্যরাতে ইবি ছাত্রলীগের উত্তেজনা, গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ ইবি ছাত্রলীগের ধাওয়া পালটা-ধাওয়া। ছবি: বাংলানিউজ

ইবি: দলীয় কর্মীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের হাতে লোহার রড, পাইপ, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। ঘটনার এক পর্যায়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল (ছাত্র) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে, রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ ঘটনায় দুই গ্রুপের সাত-আট কর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের নেতৃত্বে প্রায় ২০-২৫ জন নেতাকর্মী সাদ্দাম হোসেন হলের ২৩৫ নম্বর রুমে যান।

সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা দরজায় লাথি মারতে থাকলে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের কর্মী মোশাররফ হোসেন নীল রুম থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর রাকিবের নেতৃত্বে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন কুমার দাসসহ অন্যরা নীল ও শিমুলকে মারধর শুরু করেন।

নীল একপর্যায়ে হল থেকে বেরিয়ে তার গ্রুপের নেতাকর্মীদের জানালে জিয়া মোড়ে দু’গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সুমনসহ অন্যরা জিয়া মোড় থেকে পালিয়ে যান।

এর জের ধরে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু হলের সামনে অবস্থান নেন। অপরদিকে, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা জিয়া মোড়ে অবস্থান নেন।

ইবি ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া।  ছবি: বাংলানিউজ

এসময় উভয় গ্রুপের কর্মীরা পরস্পরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। এতে ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপের ধাওয়া খেয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা আবাসিক হলের ভেতর গিয়ে কলাপসিবল গেট আটকে দেন।

এসময় উভয় পক্ষে কাছে দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠিসোটা দেখা যায়। ঘটনার একপর্যায়ে জিয়া মোড়সহ লালন শাহ হল ও জিয়া হলের সামনে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন ও সহকারী প্রক্টর এস এম নাসিমুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটাকে পুঁজি করে কিছু অছাত্র ও বহিরাগত ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। আমরা সাংগঠনিকভাবে এর ব্যবস্থা নেবো।

ছাত্রলীগের একাংশের নেতা তন্ময় সাহা টনি বাংলানিউজকে বলেন, শোকের মাসে সাধারণ সম্পাদক খাবার খাওয়ার সময় আমাদের দুই কর্মীকে অযাচিতভাবে মারধর করেন। আমরা এর কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের উপর চড়াও হন। পরবর্তীতে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই এখন নিজ নিজ হলে অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।