ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে নাসিরের বিষয়ে ব্যবস্থা’

বাকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৯
‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে নাসিরের বিষয়ে ব্যবস্থা’

বাকৃবি (ময়মনসিংহ): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনকে তার নিজ কর্মস্থল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবাঞ্ছিত ও অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পর্যায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।

সম্প্রতি গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবির উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অর্থ-আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারী আচরণ, যৌন নিপীড়ন, বহিষ্কার, শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার মদদ দেওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগে আন্দোলন শুরু করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

১২ দিন শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে একটি তদন্ত কমিটি পাঠায়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাকে উপাচার্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্যের পদ থেকে সোমবার অব্যাহতি পাওয়ার পরের দিন মঙ্গলবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় যোগদানের অনুমতিসহ দু’দিনের ছুটির জন্য বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধানের মাধ্যমে আবেদন করেন ড. নাসিরউদ্দিন। তবে তার যোগদানের বিষয়ে ঘোর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।  

এদিকে ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনের বাকৃবিতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি এবং উপযুক্ত বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাকৃবি শিক্ষক সমিতি।  

শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ বাকৃবির শিক্ষক সমাজের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি তার নিজ কর্মস্থলে বাকৃবির বায়োটেকনোলজি বিভাগে  যোগদানের জন্য আবেদন করেছেন। অধ্যাপক নাসিরের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও (ইউজিসি) সত্যতা পেয়েছে এবং তার ভিত্তিতে তাকে অপসারণের সুপারিশ প্রদান করেছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষের কাছে অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনের উপাচার্য হিসেবে অনিয়ম ও অনৈতিকতার উপযুক্ত বিচার দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে বাকৃবির আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উনি (নাসিরউদ্দিন) বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের নেতা ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মুখোশ পরিবর্তন করে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের ফোরামে নাম লেখান। গোপালগঞ্জে বাড়ি হওয়ায় এলাকার দাপটে উপাচার্য পদ ভাগিয়ে নেন। উপাচার্য হয়েই তিনি ক্ষমতার জোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়মের রাজত্ব কায়েম করেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি একটি পরিবারিক প্রতিষ্ঠানে রুপ দেন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যোগ্যপ্রার্থী থাকা সত্ত্বেও পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে অন্তত ২৪ জনকে শিক্ষক, শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মালী, ড্রাইভার, বাস হেল্পার, সিকিউরিটি অফিসারসহ বিভিন্ন পদে চাকরি দেন। তার এ কর্মকাণ্ড শুধু বাকৃবি নয় বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করেছে। শিক্ষকরা অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনের বাকৃবি থেকে অব্যাহতিসহ উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার আগে অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে বাকৃবি প্রশাসন তার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে অ্যধাপক ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।