ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবি দিবস ঘিরে সাদামাটা প্রস্তুতি, থাকছেনা কনসার্টও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
জবি দিবস ঘিরে সাদামাটা প্রস্তুতি, থাকছেনা কনসার্টও

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): আগামী রোববার (২০ অক্টোবর) ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে পুরান ঢাকায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দিনটিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যার ব্যত্যয় ঘটছেনা এবারো।

এবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে থাকছে বেশ কিছু আয়োজন। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুসজ্জিত শোভাযাত্রা, চারুকলা প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক লাল জমিনের পরিবেশনা।

এবারের উৎসবকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনসহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে। তবে প্রতিবার দেশের স্বনামধন্য ব্যান্ড ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে কনসার্ট আয়োজিত হলেও এবার তা থাকছেনা।

জানা গেছে, এবারের আয়োজন পুরোটাই বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক রাখতে চাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠন বিশেষ করে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসবে জড়াতে চাচ্ছেন না বা দায়িত্ব দেওয়া যায় এমন কোনো মাধ্যমও নাকি পাওয়া যায়নি। প্রতি বছর বাইরে থেকে শিল্পী বা ব্যান্ড দল আনার ক্ষেত্রে মূল ‘ডিল’ ও তাদের আপ্যায়ন এবং স্টেজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে ছাত্রলীগ। যেহেতু এখন তাদের কোনো নেতা বা কমিটি নেই, তাই শিল্পী বা ব্যান্ড আনা ও তাদের আপ্যায়নের ঝামেলায় নিজেদের জড়াতে চাচ্ছেনা প্রশাসন। ফলে কিছুটা অভ্যন্তরীণ শক্তি কাজে লাগিয়েই কাজ সমাধার প্রচেষ্টা তাদের।

রেজিস্টার দফতর সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ওইদিন সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের শুরু হবে। এর পরপরই বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।  

উদ্বোধনের পর, সকাল সাড়ে ৯টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুসজ্জিত শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার চত্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, বাংলাবাজার ওভারব্রিজ পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় গেট দিয়ে প্রবেশ করে শেষ হবে।

এরপর দ্বিতীয় দফায় সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে ‘বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হবে। যা উদ্বোধন করবেন উপাচার্য।  

এরপর সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মূল আকর্ষন ‘লাল জমিন’ নাটক পরিবেশন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। যেটি একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে এক নির্যাতিত বালিকার আর্তনাদের কাহিনি নিয়েই গড়ে উঠা নাটক।  

শোনা যায়, ‘লাল জমিন’ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পেরেছেন এমন মানুষ খুব কম-ই দেখা গেছে। সবশেষ আয়োজন হিসেবে থাকবে বেলা সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান ভবন চত্বরে সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’।

এছাড়াও ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী ‘প্রকাশনা উৎসব’ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের প্রকাশিত বই ও জবির গ্রন্থ-সামগ্রী স্থান পাবে।

এদিকে, কোনো জমকালো আয়োজন ছাড়াই সাদামাটাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজনের ব্যাপারে নাখোশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মতে, প্রতি বছরে একটি মাত্র দিন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রশাসন এমন গড়িমসি না করে একটু ব্যাপক পরিসরে আয়োজন করতে পারতো।  

এছাড়া এই আয়োজনের পুরোটাই আসে স্পন্সরশিপ থেকে। সুতরাং প্রশাসন চাইলেই বড় পরিসরে আয়োজন করতে পারে। এভাবে ছোট আয়োজনের কোনো মানে ছিলনা বলেও জানান তারা।  

আর যদি টাকা কোনো ফ্যাক্ট না হয়, তাহলে এ আয়োজনের বাজেটের পুরো অর্থ নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগকে দেওয়ার দাবিও রয়েছে কারো কারো। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ‘বয়কট’ করার ঘোষণাও চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগ আছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উদীচী, আবৃত্তি সংসদ, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। এদের পরিবেশনায় দিনব্যাপী সঙ্গীতানুষ্ঠান হবে।  

‘বিকেলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের গড়ে তোলা কয়েকটি ব্যান্ড মঞ্চে পারফর্ম করবে। আর বড় আকর্ষণ ‘লাল জমিন’ নাটকও থাকছে। সুতরাং আমার মনে হয় একটি উৎসবমুখর পরিবেশে জবির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হবে,’ যোগ করে উপাচার্য।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
কেডি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।