ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আদিতমারীর সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধের তদন্ত শুরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
আদিতমারীর সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধের তদন্ত শুরু

লালমনিরহাট: ঘুষের টাকা না পেয়ে সহকারী শিক্ষকের বেতন বন্ধ করা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সেই প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অভিযোগকারীদের উপস্থিত থাকতে চিঠি পাঠান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল হক প্রধান। আগামী ৪ মার্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে বলে পত্রে জানান তিনি।

 

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের কুমড়ীরহাট এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল দাবিকৃত ঘুষের ৮ লাখ টাকা না পেয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সহকারী শিক্ষক (গনিত) মনোয়ারুল ইসলামের বেতন বন্ধ করেন। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই বেতন বন্ধ করায় বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম। এ নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি বাংলানিউজে ‘ঘুষ না পেয়ে শিক্ষকের বেতন বন্ধ করলেন প্রধান শিক্ষক’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর নড়াচাড়া দিয়ে উঠে শিক্ষা বিভাগ। একই সঙ্গে দুর্নীতি তদন্তে মাঠে নেমে পড়ে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। ঊর্ধ্বতন মহলে নড়াচাড়া দেওয়ায় বিদ্যালয়টির অভিভাবক ও স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষকের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ২২ জানুয়ারি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দফতরে  গণপিটিশন দাখিল করে বিচার দাবি করেন।

এদিকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত নিউজের প্রতিবাদ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে বেতন বন্ধের প্রতিবাদে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করা শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলামকে সপরিবারে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে ওই শিক্ষক দাবি করেন। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সহকারী শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৫ জানুয়ারি আদিতমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।  

বৃদ্ধ বাবা মাসহ পরিবারের সদস্যদের জিবীকা নির্বাহের একমাত্র পথ শিক্ষকতা পেশার বন্ধ করা বেতন সচল করতে ও প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সহকারী শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম গুরুসহকারে সংবাদ প্রকাশ করেন। ফলে জেলা প্রশাসকের কাছে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে তদন্ত করতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল হক প্রধান উভয়পক্ষকে উপস্থিত থাকতে পত্র পাঠান। আগামী ৪ মার্চ সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ে এ তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে।  

এমপিও সিটের অপর সহকারী শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদ আলী বিদ্যালয়ে যোগদান না করেও তাকে প্রতি মাসে ২৪ দিন উপস্থিত দেখিয়ে ভুয়া বেতন ভাতা দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল। তবে ওই শিক্ষক ওয়াহেদ আলী কালীগঞ্জ উপজেলায় আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের মাঠ সহায়ক পদে নিয়মিত কর্মরত থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। সেক্ষেত্রে একই ব্যক্তির বিপরীতে দুই পদে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে কৌশলী প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষক পদ থেকে ওয়াহেদ আলীকে অব্যহতি দেওয়ার দাবি জানালে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তৎকালিন সময় ওয়াহেদ আলী দাবি করেন, বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়া তো দূরের কথা। তিনি কখনই ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে যোগদানই করেননি।  

এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি ছাড়াও ভোটহীন মনগড়া কমিটি গঠন ও বিদ্যালয়ের সম্পদ লুন্ঠনের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দফতরে গণপিটিশন দায়ের করেন। এসব অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।