ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অনিয়ম করেই পদোন্নতি শিক্ষাবোর্ডের ৬ কর্মকর্তার!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২০
অনিয়ম করেই পদোন্নতি শিক্ষাবোর্ডের ৬ কর্মকর্তার!

রাজশাহী: অনিয়ম করেই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ছয় কর্মকর্তাকে। এরই মধ্যে বিষয়টি ধরা পড়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি এনফোর্সমেন্ট দলের অভিযানে এ অনিয়ম ধরা পড়ে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদও চালিয়েছে দুদক।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুপুরে শিক্ষাবোর্ডে এ অভিযান পরিচালনা করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল।

অনিয়ম করে পদোন্নতি পাওয়া ছয় কর্মকর্তা হলেন- রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (জেএসসি) ফরিদ হাসান, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (স্ক্রিপ্ট) রুবী, উপ-সচিব (ভাণ্ডার) দুরুল হুদা, উপ-সচিব (প্রটোকল) খোরশেদ আলম, উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক (রেজি.) মো. নুরুজ্জামান ও লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন ডকুমেন্টশন অফিসার সুলতানা শামীমা আক্তার।

তারা প্রত্যেকে সপ্তম গ্রেডের কর্মকর্তা ছিলেন।

তাদের ষষ্ঠ গ্রেড টপকে অনিয়মের মাধ্যমে সরাসরি পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। বোর্ডসভা অনুষ্ঠিত না হলেও গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোকবুল হোসেন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে তাদের পদোন্নতির আদেশ জারি করেন।

এরপর পদোন্নতির বিষয়টি না জানিয়েই গত ২৬ জানুয়ারি বেতন শীটে সই করার জন্য শিক্ষাবোর্ড সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেওয়ায় তিনি তাতে সই করেননি। এতে বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান নিজের ক্ষমতাবলে বেতন দেন। এরই মধ্যে এ পদোন্নতির বিষয়ে দুদকের হটলাইন ১০৬-এ একটি অভিযোগ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাবোর্ডে বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে দুদক।

তবে বর্তমানে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড কানাডায় অবস্থান করছেন। তার অবর্তমানে বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (সচিব) ড. মোয়াজ্জেম হোসেন দুদক কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাকে না জানিয়েই ওই ছয় কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। বেতন-ভাতার ফাইল তার কাছে উপস্থাপন করার পরই তিনি পদোন্নতির বিষয়টি জানতে পারেন।

এদিকে, দুদক জানিয়েছে সরেজমিনে পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহের পর পদোন্নতির ব্যাপারে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান। বর্তমান জনবল কাঠামোতে শূন্য পদ না থাকলেও মনগড়া পদ সৃষ্টি করে ওই ছয় কর্মকর্তাকে ষষ্ঠ গ্রেড ডিঙিয়ে (সুপারসিড করে) সপ্তম গ্রেড থেকে সরাসরি পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। নির্দেশনা আসার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাদের কাছে অভিযোগ ছিল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান কোন সভা আহ্বান না করেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওই ছয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছেন। এমন অভিযোগের পরই শিক্ষাবোর্ডে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়।

রেকর্ডপত্র সংগ্রহের পর পদোন্নতির ব্যাপারে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য তারা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে শিগগিরই প্রতিবেদন পাঠাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।