বুধবার (১৮ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতিক্রমে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ইবি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি। তার জিডি নম্বর ৬৫৭।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিফ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসময় তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান প্রকৌশলীর আবেদনের বিবরণ থানায় সাধারণ ডায়েরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হিউমেন রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেনকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।
কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. কে এম আব্দুস সোবহান ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন।
কমিটির সদস্যদের আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২০১৮ সালে ৫৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় একনেক। বর্তমানে বরাদ্দকৃত টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। আগামী ৩০ মার্চ ও ৬ এপ্রিল ৫৩ কোটি টাকা করে ১০৬ কোটি টাকার দুটি দরপত্র খোলা হবে।
এই দরপত্রে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলীমুজ্জামান একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘ইবিতে আর চাকরি করা হলো না আমার। রিজাইন করব, ইনশা-আল্লাহ। ’
সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন সময় তাকে অজানা নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না পাইয়ে দিলে সন্তানের ক্ষতি, তিনি অপমানিত হবেন, পত্রিকায় বিভিন্ন খারাপ কিছু লিখে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার কথা বলছে তারা। তাছাড়া অতীতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার হুমকিও দেওয়া হয়।
ডায়েরিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন মেয়েদের নাম্বার দিয়ে তাকে ফোন করা এবং মেসেঞ্জারে বিভিন্ন টেক্সট দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে তিনি মানসিকভাবে খুবই ভীত।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলীমুজ্জামান টুটুল বলেন, ‘পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে গত এক বছরে বেশ কয়েকবার আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। একজন ব্যক্তিই বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে আমাকে বার বার হুমকি দিয়ে আসছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিরাপত্তার খাতিরে আমি প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে থানায় জিডি করেছি। ’
তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিটির পরিচিতি জানতে চাইলে তিনি পরিচয় দিতে অপরাগত প্রকাশ করেন। তবে চাকরি থেকে অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবার পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা, আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা এবং পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ক্যাম্পাসে থাকবো। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন প্রকৌশলীকে এভাবে হুমকি প্রদান কখনো কাম্য নয়। আমরা তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। যে ব্যক্তিই হোক না কেনো আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
আরএ