ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সিদ্ধান্ত এখনই নয়, উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২০
সিদ্ধান্ত এখনই নয়, উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে টানা ছুটিতে এলোমেলো হয়ে গেছে এবারেরর উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়ার পড়ালেখার ছক। পরীক্ষাটা ভালোভাবে দিতে যে ছক তিনি তৈরি করেছিলেন, তা আর ঠিক রাখা যাচ্ছে না। ছুটি প্রলম্বিত হওয়ায় পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে, সেই উৎকণ্ঠায় এখন মনও বসাতে পারছেন না লেখাপড়ায়।

এবছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা। তাই শুধু একজন নয়, ছুটি শেষ হয়ে পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে, সে চিন্তা, উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন লাখো শিক্ষার্থী।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয় গত ২২ মার্চ। এসময় এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে এই পরীক্ষার পরবর্তী সময়সূচি জানানোর কথা থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় তা এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। এদিকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি বেড়েছে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও কার্যকর হবে।

এ অবস্থায় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বাধা পড়া, মানসিক দুশ্চিন্তা, পড়াশোনার ধারাবাহিকতা হারিয়ে ফেলা এবং সর্বোপরি পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির জন্য যথাযথ সময় পাওয়া যাবে কিনা- সেসব বিষয় ভেবেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ভেতর দিয়ে দিন পার করছেন পরীক্ষার্থীরা। একই অবস্থা পরীক্ষার্থীদের অভিভাবদেরও।

এ বিষয়ে কথা হলে পরীক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া বাংলানিউজকে বলেন, পরীক্ষা পেছানোর ফলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যেমন ঠিকমতো পড়তে পারছি না। কোনো সম্ভাব্য তারিখ না দেওয়ার কারণে পরীক্ষা কবে হবে, কেমন হবে এসব নিয়ে প্রায়ই চিন্তা হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছে পড়াশোনার ধারাবাহিকতা হারিয়ে গেছে। কোথায় থেকে কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। সব ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে। পড়তে বসলেই সবার আগে মাথায় যেটা আসে সেটা হলো পরীক্ষা কবে হবে!

তিনি বলেন, আবার অ্যাডমিশন নিয়েও চিন্তা হয়। পরীক্ষার পর অ্যাডমিশনের প্রস্তুতির জন্য যথাযথ সময় না পেলে খুবই সমস্যা হবে। কীসের প্রিপারেশন নেবো তা অনেকটাই পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। পরীক্ষা পেছানোতে মাথায় এখন পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নিয়ে দু'রকম চাপ কাজ করছে। সব মিলিয়ে খুবই বাজে একটা অবস্থা।

আরেক পরীক্ষার্থী আতাউর রহমান বলেন, পরীক্ষার জন্য বেশ গোছানো একটা প্রস্তুতি ছিল। তবে এখন সেটা আর নেই, কেমন যেন হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় টেনশন বর্তমান পরিস্থিতিতে সব সময় আবদ্ধ হয়ে থাকায় পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারছি না। এর মধ্যে কখন কীভাবে হুট করে পরীক্ষার ডেট হয়ে যাবে; তাই খুব বিব্রত আছি। পরীক্ষার আগে যদিও মনে হচ্ছিল পরীক্ষা পিছিয়ে গেলে আরও ভালো করে প্রস্তুতি নিতে পারবো কিন্তু পেছানোর পর থেকে পড়ার তাল হারিয়ে গেছে।

এদিকে প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় শিক্ষাপঞ্জিও হয়ে গেছে এলোমেলো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির বিষয়টিও মাথায় রাখছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়লেও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না বলে রোববার (৫ মার্চ) বাংলানিউজকে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বাংলানিউজকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটিও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে স্থগিত থাকা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।

তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকের মাধ্যমেই এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২০
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।