ঢাকা: সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলার মতো পরিবেশ এখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।
রোববার (২৩ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আর স্কুলে স্কুলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাবনার সার-সংক্ষেপের অনুমোদন এখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফেরত আসেনি বলে জানান সচিব আকরাম।
করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে মার্চে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার মধ্যে ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির প্রার্দুভাব অব্যাহত থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্কুল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন একটাও খুলবে না। অন্তত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই বন্ধ থাকবে যদি করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব অব্যাহত থাকে। যখন এটা থামবে তখন আমরা খুলবো।
প্রধানমন্ত্রীর কথার জের ধরে সাংবাদিকরা প্রাথমিক সচিবের কাছে জানতে চান- সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে কি-না; এসময় সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী কিন্তু গতকাল বলেছেন যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে এখনও কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। আপনারা নিজেরাও বোঝেন আসলে পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি হয়নি।
‘এখন যে অবস্থা, এখনও কিন্তু ২০-২২ শতাংশ আক্রান্ত। সেই হিসাবে আমাদের শিশুদের-শিক্ষকদের...; স্কুল খুললে অভিভাবকেরা চলে আসবে। তাদের আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলব কেন, সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা মনে করছি যে আসলে তো এখনও পরিবেশ তৈরি হয়নি। ’
সচিব বলেন, উন্নত দেশ যারা স্কুল খুলেছিল, তারাও কিন্তু এখন আবার বন্ধ করে দিয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করছি যে, আমাদের বাচ্চাদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলাটাই সমীচীন হবে। সেজন্য আমরা সরকারের সাথে আলোচনা করে দুই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবো স্কুল কখন খোলা যায়।
সেপ্টেম্বরে তো খোলার উপায় নাই- প্রশ্নে সচিব আবারও বলেন, সেটা আপনারাও বোঝেন যে সেপ্টেম্বরে খোলার মতো পরিবেশ হয়নি এখনও।
করোনার কারণে এবছর কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার বদলে স্কুলে স্কুলে নেওয়ার প্রস্তাব করে গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে সার-সংক্ষেপ পাঠায় প্রাথমিক মন্ত্রণালয়।
সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে সচিব বলেন, আমরা বলেছি যে স্ব স্ব স্কুলগুলো পরীক্ষা নেবে যদি খুলতে পারে। কেন্দ্রীয় পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য প্রস্তাবনা আছে। এর বাইরে হচ্ছে যে স্কুলগুলোর, যদি পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তাহলে স্ব স্ব স্কুল পরীক্ষা নেবে। তবে সেই অনুমোদন এখনও আসেনি।
নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে সচিব বলেন, ১৯৭১ সালে ক্লাস সিক্সে পড়ি। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর সব স্কুল বন্ধ। আমি কিন্তু আর স্কুলে যেতে পারিনি। আমি বাহাত্তর সালে ক্লাস সিক্স থেকে অটো প্রমোশন পেয়ে সেভেনে উঠে গেছি। পরিবেশ পরিস্থিতি বলে দেবে আমাদের কী করতে হবে।
প্রাথমিকে একাডেমিক ইয়ার বাড়বে কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, না। আমরা বলিনি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানবো। মুখ্য সচিবের সাথে যে মিটিং হয়েছিল সেখানেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে এই বছরের মধ্যে শেষ হবে।
‘আমরা আশা করছি ডিসেম্বরের আগে স্কুলগুলো খুলতে পারব। খুলতে পারলে আমরা যে ৩৫ শতাংশ পড়িয়েছি এবং ঘরে বসে টিভি ও রেডিও’র মাধ্যমে পাঠদান করছি, স্থানীয় শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন। আমরা এখনি বলছি না যে অটো পাস। পরীক্ষা নেওয়ার সময় পেলে যে পর্যন্ত পড়িয়েছি সেটার মধ্যে স্কুলগুলো প্রশ্ন করে পরীক্ষা নেবে। তারপরে যদি না নেই তাহলে ...। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২০
এমআইএইচ/এইচএডি