জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): র্যাগিংয়ের দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৪৭তম ব্যাচের ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরাজ-উল-হাসান বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান।
এর আগে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে ১১ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ৪৮তম ব্যাচের (প্রথম বর্ষ) শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগে ওঠে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ জানুয়ারি ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের দিন থেকে এ বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- মার্কেটিং বিভাগের মো. শিহাব ও মোহাম্মদ মশিউর রহমান ভূঁঞা, চারুকলা বিভাগের মো. আকাশ হোসেন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের মো. তামিম হোসেন ও মো. রিজওয়ান রাশেদ সোয়ান, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. ফয়জুল ইসলাম নিরব, বাংলা বিভাগের মো. শিমুল আহমেদ ও সারোয়ার হোসেন সাকিল, ইংরেজি বিভাগের শাকিল মাহমুদ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. সালাউদ্দিন ইউসুফ ও মো. রোজেন নুর।
এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে শিহাবকে দুই বছর ও বাকিদের এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। বহিষ্কারের নির্ধারিত সময়ে এই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল কিংবা ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবে না।
এছাড়া বহিষ্কারাদেশ শেষ হলে বঙ্গবন্ধু হল ছেড়ে তাদের জন্য বরাদ্দ করা হলে উঠারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রক্টর কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বহিষ্কৃত এই শিক্ষার্থীরাসহ ৩০-৩৫ জন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেওয়ার জন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গণরুমে যায়। র্যাগ দেওয়ার এক পর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে প্রথম বর্ষের ফয়সাল আলমকে ডেকে নিয়ে পরিচয় দিতে বলে তারা। এ সময় ফয়সাল উচ্চস্বরে হলের নাম বলতে না পারায় তাকে নানারকম শারীরিক কসরত করতে বলে বহিষ্কৃতরা। ফয়সাল এতে অস্বীকৃতি জানালে তার ডান গালে পর পর দুটি থাপ্পড় দেয় শিহাব। দ্বিতীয় থাপ্পড় দেওয়ার পরেই ফয়সাল খিচুনি দিয়ে পড়ে যায় এবং তার কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ফয়সাল বাকরুদ্ধ হয়ে যায় এবং তার বন্ধুরা এবং দ্বিতীয় বর্ষের তিনজন মিলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২১
এইচএডি/