জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ হত্যার ঘটনায় হত্যাকারীদের বিচারের দাবিসহ ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ‘শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারের শিক্ষকরা।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তাদের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশের পাদদেশ থেকে র্যালি, ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে আচার্য বরাবর খোলা চিঠি দেওয়া, ১৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ, ১৪ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ প্রকৃতি ধ্বংস, গণনিয়োগ ও প্রশাসনিক দুর্নীতি বিষয়ক গঠিত ৩টি অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন, ১৬ ফেব্রুয়ারি জুবায়ের হত্যাকা- ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকা-ে তদন্তে সর্বস্তরের মানুষজন নিয়ে একটি গণতদন্ত কমিটি গঠন, ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তমঞ্চে ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই’ বিষয়ক মুক্ত আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদশর্নী।
বুধবারের এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিন, অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিম, অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক সোমা মুমতাজ, সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন, সহযোগী অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, সহযোগী অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন ও আন্দোলনের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষক সমাজের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমাজ তাদের আন্দোলন ২ দিনের জন্য স্থগিত করেছিলেন। কিন্তু, উপাচার্য তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায়, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন শিক্ষক সমাজ ব্যানারের শিক্ষকরা।
শিক্ষক সমাজের শিক্ষকদের দাবিগুলো হচ্ছে- জুবায়ের হত্যাকা-ের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার ও জুবায়েরের পরিবারকে সম্মানজনক আর্থিক ক্ষতিপূরণ, ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন, প্রক্টরিয়াল বডির পুনর্গঠন, ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবাধ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি নিশ্চিত করা, বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত ও গণনিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে যারা অযোগ্য, তাদের নিয়োগ বাতিল করা, শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে সাবেক প্রক্টরের বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ অনুসারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও শরীফুল আলমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার বিচার করা।
শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সহকারী প্রক্টর কবিরুল বাশার ও আসম ফিরোজ-উল-হাসান পদত্যাগ করেছেন। যদিও তারা ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বডির নির্বাচনের জন্য ১০ কর্মদিবস সময় বেঁধে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, ‘এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে পরবর্তীতে আরও কর্মসূচি দেওয়া হবে। ’
আন্দোলনের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, ‘৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা হয়েছিল, তা তিনি ভঙ্গ করেছেন। তাই, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা আবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। ’
এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়োত্তীর্ণ পদসমূহ যেমন ডিন, সিন্ডিকেট, রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট এবং উপাচার্য প্যানেলের যথা দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষক সমাজ ব্যানারের শিক্ষকদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা স্থগিত করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১২